সর্বশেষঃ
সাবেক ১২ মন্ত্রীসহ ১৪ জনকে আজ হাজির করা হচ্ছে ট্রাইব্যুনালে দীপু মনির সুপারিশে মাউশিতে তিন হাজার পদায়ন শিক্ষা ভবনের সামনে ৭ কলেজ ছাত্রের বিক্ষোভ এবং সড়কে পুলিশ ব্যারিকেড ২০২৫ সালে হজে নিবন্ধন শেষ হয়েছে ৪৩,৩৭৪ জনের প্রতিটি চার নারীর মধ্যে তিনজনই সহিংসতার শিকার: স্বাস্থ্য ও সামাজিক জরিপ ঢাকার সাবেক চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিম সাময়িক বরখাস্ত শীতের আগমনী বার্তা: আবহাওয়া অফিসের শৈত্যপ্রবাহের আগাম সতর্কতা নির্বাচনে মাঠ প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার মির্জা ফখরুল বলছেন, এ দেশের মানুষ পিআর পদ্ধতি গ্রহণ করবে না সচেতনতা ও টিকাদানেই টাইফয়েড নিয়ন্ত্রণ সম্ভব: নূরজাহান বেগম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা: আমার ছেলে-মেয়েরা দেশে, আমি কি ভাবে নিরাপদ থাকব? প্রধান উপদেষ্টা রোমের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করলেন
কেন বিদেশি শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে দ্রুত ফিরতে বলছে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো?

কেন বিদেশি শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে দ্রুত ফিরতে বলছে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানুয়ারিতে ক্ষমতা গ্রহণের আগেই বিদেশি শিক্ষার্থী ও কর্মীদেরকে নিজ নিজ ক্যাম্পাসে ফিরে আসার পরামর্শ দিয়েছে দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।

সম্প্রতি ইমেল বার্তার মাধ্যমে তাদেরকে বিষয়টি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প জয়লাভের পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসীদের মধ্যে এমনিতেই দিন দিন উদ্বেগ বাড়ছে। এর মধ্যে আবার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর হঠাৎ এমন সতর্কবার্তায় অনেকে রীতিমত চিন্তায় পড়ে গেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব কলোরাডো ডেনভারের অধ্যাপক ক্লোই ইস্ট ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে জানিয়েছেন, ‘বিদেশি সব শিক্ষার্থীরা এখন উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে’।

রিপাবলিকান পার্টির নেতা ট্রাম্প এবার ক্ষমতায় বসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অভিযান চালানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ কাজে সহযোগিতার জন্য প্রয়োজনে মার্কিন সামরিক বাহিনীকে ব্যবহার করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এই অভিযানের ফলে যারা বেকায়দায় পড়তে পারেন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিদেশি শিক্ষার্থী রয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।

অভিবাসী ও বিদেশি শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করা ‘হায়ার এড ইমিগ্রেশন পোর্টালে’র তথ্যে দেখা যাচ্ছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনথিভুক্ত বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা বর্তমানে চার লাখেরও বেশি।

যদিও ট্রাম্পের নতুন প্রশাসনে কর্মকর্তারা আশ্বাস দিয়ে বলছেন, অনথিভুক্ত অভিবাসীদের রাখার জন্য তারা বড় ধরনের আবাসনের ব্যবস্থা করবেন।

ট্রাম্পের হবু প্রশাসনের কর্মকর্তারা পরামর্শ দিয়েছেন যে তারা নির্বাসনের তালিকায় অনথিভুক্ত অভিবাসীদের জন্য বিশাল হোল্ডিং সুবিধা তৈরি করবে।

অভিজ্ঞ অভিবাসন কর্মকর্তা ও ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন ‘সীমান্ত জার’ টম হোম্যান বলেছেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি ভয়ঙ্কর অপরাধী ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি- এমন মানুষজনকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়নের বিষয়ে অগ্রাধিকার দিবেন।

সে হিসেবে শিক্ষার্থীদের খুব একটা ভয় পাওয়ার কথা না বলা হলেও বাস্তবতা হচ্ছে, তাদের মধ্যে উদ্বেগ রয়েই গেছে।

অধ্যাপক ইস্ট বলছেন, অভিবাসন নিয়ে অনিশ্চয়তার ফলে বিদেশি শিক্ষার্থীরা এখন ভীষণ চাপে রয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, ভিসার মেয়াদ বাড়ানো হবে কি না এবং পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি পাবেন কি না, সেটি নিয়েও এখন অনেক শিক্ষার্থী চিন্তায় রয়েছেন।

নব নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট আগামী ২০ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা নিবেন। ফলে তার আগেই নিজেদের বিদেশি শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাদের শীতকালীন ছুটি কাটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরার পরামর্শ দিয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটস।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষগুলো বলছেন, ২০১৬ সালে প্রথম ট্রাম্প প্রশাসনের জারি করা ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার অভিজ্ঞতার থেকেই অফিস অব গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স সতর্কতা হিসেবে এই পরামর্শটি দিচ্ছে।

উল্লেখ্য, প্রথম মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ২০১৭ সালে ট্রাম্প হোয়াইট হাউজ থেকে একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেছিলেন, যেখানে বেশ কয়েকটি মুসলিম প্রধান দেশ ছাড়াও উত্তর কোরিয়া ও ভেনেজুয়েলার নাগরিকদেরকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

প্রথম দফায় প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনকালে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রেও বেশ কিছু কঠোর নিয়ম চালু করার প্রস্তাব করেছিলেন রিপাবলিকান এই নেতা।

ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটসের মতো ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি এবং ওয়েসলিয়ান ইউনিভার্সিটিও তাদের বিদেশি শিক্ষার্থী ও কর্মীদের ২০ জানুয়ারির আগে ক্যাম্পাসে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছে।

অন্যদিকে, ইয়েল ইউনিভার্সিটিতে একটি ওয়েবিনার পর্যন্ত আয়োজন করতে দেখা গেছে, যেখানে ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিদেশি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা।

কঠোর অভিবাসন নীতির মাধ্যমে ট্রাম্প মূলত সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়ে চালু হওয়া একটি কর্মসূচির ইতি টানতে চাচ্ছেন, যে কর্মসূচিটি শিশু হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে আসা প্রায় পাঁচ লাখ মানুষকে এতদিন সুরক্ষা দিয়ে আসছিলো।

বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা এখন তাদের পড়াশোনা ও একাডেমিক কার্যক্রমের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত রয়েছেন, তাদেরই একজন হলেন ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের আর্লহাম কলেজে অধ্যয়নরত জাপানি নাগরিক অই মায়েদা।

অই মায়েদা বলেন, ২০২৬ সালের মে মাসে আমার স্নাতক পাস করার কথা। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে যে, আমাদের জন্য মার্কিন প্রশাসন একটু বেশিই বিপজ্জনক হতে চলেছে। পরিস্থিতি পরিবর্তন হয়ে সামনে ভালো কিছু হওয়ার বিষয়ে আমি খুব একটা আশাবাদী না।

তিনি আরও বলেন, (ট্রাম্প) বলেছেন যে, তিনি শুধুমাত্র অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চান, কিন্তু বেশ কয়েকবার তাকে এর বাইরেও ব্যবস্থা নেওয়ার প্রচেষ্টা চালাতে দেখা গেছে। কাজেই আমি মনে করি, তার এই সিদ্ধান্তের ফলে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসায় প্রভাব পড়তে পারে, যার ফলে তাদেরকে নিজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়াও বেশ সহজ হয়ে যাবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY Shipon tech bd