বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য মূল বেতনের ১৫ শতাংশ বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকার। এই বাড়িভাড়া বৃদ্ধি দুটি ধাপে কার্যকর হবে, যা এই অর্থনৈতিক পরিবর্তনকে আরও সুসংগত ও কার্যকরী করবে। সোমবার (২১ অক্টোবর) শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরার এক গুরুত্বপূর্ণ সভায় এই সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেন, যেখানে আন্দোলনরত শিক্ষক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষক নেতাদের পক্ষ থেকে দেলাওয়ার হোসেন আজিজী জানিয়েছেন, এই সমাধানটি শিক্ষকদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরো বলেন, বুধবার (২২ অক্টোবর) থেকে শিক্ষকরা আবার ক্লাসে ফিরে যাবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা খালিদ মাহমুদ বলেন, আজকের দিনটি শিক্ষাবিষয়ক ইতিহাসে এক স্মরণীয় দিন। তিনি জানান, চলতি বছরের নভেম্বরের ১ তারিখ থেকে এবং ২০২৬ সালের জুলাই থেকে, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য ৭.৫ শতাংশ করে দুই ধাপে মোট ১৫ শতাংশ বাড়িভাড়া কার্যকর হবে। এখনই এই ভাতা নিশ্চিত হওয়ায় শিক্ষকরা অত্যন্ত খুশি ও গর্বিত। তিনি বলেন, শিক্ষককে আরও সম্মান ও মর্যাদা দেওয়া দরকার এবং শিক্ষার মানোন্নয়নে রাষ্ট্রের আরও সচেষ্ট থাকতে হবে।
তার মতে, এই প্রক্রিয়া সহজ ছিল না; বিভিন্ন মতবিরোধ, বিতর্ক এবং অভিযোগের মধ্য দিয়ে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছানো হয়েছে। শিক্ষা বিভাগ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও উপদেষ্টাদের সঙ্গে একযোগে কাজ করে গেছেন যাতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর স্বার্থ সুরক্ষিত হয়। তিনি উল্লেখ করেন, এটি কোনো একক কৃতিত্ব নয় — এটি একটি যৌথ সাফল্য।
উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের মাসিক ভাড়া ১০০০ টাকা করে দেয়া হত। ৩০ সেপ্টেম্বর তারা বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বৃদ্ধি চেয়ে অর্থ বিভাগে চিঠি দিয়েছিল। তবে আন্দোলনের কারণে সেটি কার্যকর হয়নি। এরপর তারা শতভাগ ভাড়া বৃদ্ধির জন্য আলাদাভাবে অনুরোধ জানান।
এর মধ্যে, ১৯ অক্টোবর সর্বনিম্ন ২০০০ টাকা বাড়িভাড়া ভাতা দেওয়া সংক্রান্ত ঘোষণা আসে। সেসময় শিক্ষকরা বেশ কিছু দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন, যাতে তারা বাড়িভাড়া আরও বাড়ানোর দাবি করেছিলেন। মঙ্গলবার শিক্ষকরা কালো কাপড় পরে শাহবাগে অবস্থান নেন। এই পরিস্থিতির মধ্যেই সরকারের পক্ষ থেকে এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের ঘোষণা আসে। এখন শিক্ষকরা আবার শিক্ষার মূল কাজের শ্রেণিতে ফিরতে মুখিয়ে রয়েছেন, যাে শিক্ষার্থীদের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এ প্রবণতা ও আলোচনা ভবিষ্যতে শিক্ষার মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এই সিদ্ধান্ত শিক্ষকদের মর্যাদা ও জীবনমান উন্নয়নে এক নতুন অধ্যায় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
Leave a Reply