জাপানের রাজনীতিতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো। মঙ্গলবার পার্লামেন্টে ভোটাভুটির মাধ্যমে সানায়ে তাকাইচি দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। এই ঐতিহাসিক নির্বাচনের ফলে তিনি দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক উল্লেখযোগ্য মাইলফলক স্পর্শ করেছেন, যা দেশের নারীদের জন্য এক বড় অনুপ্রেরণা। এই খবর দিয়েছে জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যম দ্য জাপানটাইমস।
প্রথমে জানা যায়, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)-র সভাপতি তাকাইচি নিম্নকক্ষে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ২৩৭ ভোট পেয়ে সহজেই জয় লাভ করেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছে কনস্টিটিউশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (সিডিপি)-র নেতা ইয়োশিহিকো নোডা, যিনি পেয়েছেন ১৪৯ ভোট।
ভোটের সময় পার্লামেন্টের সদস্যরা তাকাইচিকে শুভেচ্ছা জানান ও উষ্ণ করতালির মাধ্যমে তাদের স্বাগত জানান। এই নির্বাচনে জোট গড়ায় মূল ভূমিকা রেখেছে এলডিপি ও জাপান ইনোভেশন পার্টি (জেআইপি)। এই জোটের মাধ্যমে বিরোধী দলের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা সহজ হয় এবং তাঁদের ক্ষমতায় আসার পথ সুগম হয়।
প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার আগেই, মঙ্গলবার সকাল থেকেই তাকাইচি তার নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের কাজ শুরু করেন। জানা গেছে, জেআইপি থেকে কোনও সংসদ সদস্য তার মন্ত্রিসভায় স্থান পাবেন না। তবে দলের নেতারা মনে করছেন, নতুন সরকারে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রিত্ব পেতে পারেন ইয়োশিমাসা হায়াশি, শিনজিরো কোইজুমি ও সাবেক বিদেশমন্ত্রী তোশিমিৎসু মোতেগি। এসব ব্যক্তিরা পূর্বে সরকারের মুখপাত্র ও কৃষিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। মঙ্গলবার সকালে তারা শিগেরু ইশিবার নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন।
দলীয় প্রচারে তাকাইচি বলেছিলেন, সরকার গঠনের সুযোগ পেলে তিনি নারীদের আরও বেশি সম্পৃক্ততা দেবেন এবং উচ্চপদে নিয়োগ করবেন। ফলে তার মন্ত্রিসভায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী মন্ত্রী থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া, জেআইপি-র পার্লামেন্টারি অ্যাফেয়ার্স প্রধান তাকাশি এন্ডো তাকাইচির প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে সংসদে কাজ করছেন সানায়ে তাকাইচি। তিনি অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। চলতি মাসের শুরুতেই তিনি এলডিপি-র সভাপতি নির্বাচিত হন, যা তার তৃতীয় প্রচেষ্টা। এই ঐতিহাসিক বিজয় ভারতের নারীদের জন্য এক অনুপ্রেরণার বার্তা হিসেবে বিবেচনা করছেন বিশ্লেষকরা।
Leave a Reply