সর্বশেষঃ
সাবেক ১২ মন্ত্রীসহ ১৪ জনকে আজ হাজির করা হচ্ছে ট্রাইব্যুনালে দীপু মনির সুপারিশে মাউশিতে তিন হাজার পদায়ন রাহুল গান্ধীর অভিযোগ: হরিয়ানায় প্রতি ৮ জনে ১ জন ভুয়া ভোটার মামদানির জয়ে নিউইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব হ্রাস: ট্রাম্প ফিলিপাইনে কালমায়েগির তাণ্ডবে মৃতের সংখ্যা ১৪০ ছাড়ালো বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের চারদিকে আলোচনার ঝড়: বিলিয়ন ডলারের চুক্তিতে ভারতের উদ্বেগ পুতিনের নির্দেশ: পারমাণবিক পরীক্ষা পুনরায় আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু দাকোপের ঝপঝপিয়া নদী ভাঙন: ২০ হাজার মানুষ আতঙ্কে নিষিদ্ধআ.লীগের সাবেক এমপি পীযুষ কান্তি আর নেই কালীগঞ্জে ১৮০ পিস ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেটসহ মাদক কারবারী আটক পাটকেলঘাটায় ভাড়ার মোটরসাইকেল চালকের মৃত্যু খুলনায় পুলিশের ৫৯তম ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত
পাঁচ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের বোর্ড বাতিল, গ্রাহকসেবা অব্যাহত থাকবে

পাঁচ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের বোর্ড বাতিল, গ্রাহকসেবা অব্যাহত থাকবে

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, পাঁচটি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের বোর্ড বাতিল হলেও গ্রাহকসেবায় কোনও বিঘ্ন ঘটবে না। এই ব্যাংকগুলোতে পেমেন্ট, রেমিট্যান্স ও এলসি সহ সব ধরনের ব্যাংক্রিয় কার্যক্রম আগের মতোই চালু থাকবে। বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

গভর্নর উল্লেখ করেন, যদিও ব্যাংকের বোর্ড ভেঙে গেছে, তবে দৈনন্দিন ব্যাংকিং কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলতে থাকবেই। ব্যবসার ধারাবাহিকতা রক্ষা করা আমাদের লক্ষ্যে, এবং ধাপে ধাপে এই পাঁচ ব্যাংকের সম্পদ ও আইটি সিস্টেম একত্রিত করে আরও শক্তিশালী ও কার্যকর করাই আমাদের উদ্দেশ্য।

তিনি আরও জানান, এই পাঁচ ব্যাংকের মোট ৭৫০টি শাখা রয়েছে এবং তারা প্রায় ৭৫ লাখ আমানতকারীর সুবিধা দিয়ে থাকে। লিকুইডেশন এড়াতে তাদের স্বার্থে ব্যাংকগুলোকে প্রথম ধাপে কাঠামোগত ও প্রযুক্তিগতভাবে একীভূত করার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

গভর্নর বলেন, ‘নন-ভায়েবিল’ বা অস্থায়ীভাবে চলমান না-ছাড়ার মতো ঘোষণা দেওয়া এই পাঁচ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। সাথে সাথে, ব্যাংকগুলোর কোম্পানি সেক্রেটারিকে ‘নন-ভায়েবিলিটি’ নোটিশ পাঠানো হয়েছে, যার ফলে তারা আর কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না।

অন্তর্ভুক্ত এই পাঁচ শরিয়াহ ব্যাংক দ্বারা মিলেই দেশের সবচেয়ে বড় শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক তৈরি হবে বলে উল্লেখ করেন গভর্নর। নতুন এই সংযুক্ত ব্যাংকের পুঁজি পাত্র হবে ৩৫ হাজার কোটি টাকা—যা বর্তমানে দেশের যে কোনও ব্যাংকের থেকে অনেক বেশি। তিনি নিশ্চিত করেন, এটি একটি ‘সরকারি মালিকানাধীন হলেও বেসরকারি ব্যাংকের মতো পরিচালিত’ হবে। পেশাদার ব্যবস্থাপনা, বাজারভিত্তিক বেতন কাঠামো, পৃথক শরিয়াহ বোর্ড গঠন করা হবে। তিনি বললেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, ইসলামিক ব্যাংকিং বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ।’

শেয়ারহোল্ডারদের বিষয়ে গভর্নর জানান, ‘শেয়ারদাতাদের ইকুইটির মূল্য এখন নেগেটিভ। তাই শেয়ারের মূল্য শূন্যে বিবেচনা করা হবে। কেউ ক্ষতিপূরণ পাবেন না।’

জনসাধারণকে আরও আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, দুই লাখ টাকা পর্যন্ত আমানতকারীরা সকল টাকা সম্পূর্ণ নিজেরা তুলতে পারবেন। বড় অঙ্কের আমানতের ক্ষেত্রে ধাপে ধাপে অর্থ উত্তোলনের সুযোগ থাকবে। বিস্তারিত পরবর্তীতে গেজেট নোটিফিকেশন এর মাধ্যমে জানানো হবে। পাশাপাশি, তিনি সবাইকে অনুরোধ করেন, আতঙ্কে না পড়ে প্রয়োজনীয়তার বেশি অর্থ তোলা এড়িয়ে চলার।

আগামী জাতীয় নির্বাচন ও সরকার পরিবর্তনের পর এ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না, জানতে চাইলে গভর্নর বলেন, এটি দেশের স্বার্থে নেওয়া একটি সিদ্ধান্ত। সরকার বদলালেও, জনগণের সুবিধার জন্য এই অগ্রাধিকার দেওয়া অব্যাহত থাকবে।

অন্যদিকে, আর্থিক স্থবিরতার কারণে শরিয়াহভিত্তিক এই পাঁচ ব্যাংককে অকার্যকর ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর পাশাপাশি, এই ব্যাংকগুলোকে মার্জ বা একীভূত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রস্তাব ও অর্থনৈতিক বিভাগে সুপারিশের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়। ব্যাংকগুলো হলো ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামিক ব্যাংক পিএলসি, গ্লোবাল ইসলামিক ব্যাংক পিএলসি, ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি, এক্সিম ব্যাংক পিএলসি এবং সোশ্যাল ইসলামিক ব্যাংক পিএলসি। বুধবার এই ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠানো হয়।

চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়, ৫ নভেম্বর থেকে এই ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ কার্যক্রম স্থগিত থাকবে এবং এই ব্যাংকগুলো ‘রেজোলিউশনের’ আওতায় পরিচালিত হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, এই ব্যাংকগুলোকে একীভূত করে একটি নতুন, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ইসলামিক ব্যাংক গঠন করা হবে, যার নাম ‘সম্মিলিত ইসলামিক ব্যাংক’ হবে। এ বিষয়ে আজ ওই ব্যাংকের বিভিন্ন পরিচালক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের জরুরি সভা ডাকা হয়েছে। সেখানে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক অবহিত করা হবে।

গত ৯ অক্টোবরে সরকারি অনুমোদন পায় এই নতুন ইসলামিক ব্যাংক গঠনের জন্য উপদেষ্টা পরিষদ। চলতি বছর যা দেশের আর্থিক ব্যবস্থার জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন। এক বছর ধরে এসব ব্যাংকের আর্থিক পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হতে থাকায় বাংলাদেশ ব্যাংক তাদেরকে অনেক চেষ্টা করেও সহযোগিতা করতে পারেনি। ব্যাংকের লিকুইডিটি সংকট, বড় আকারের শ্রেণিকৃত ঋণ, প্রভিশন ঘাটতি এবং মূলধন সমস্যা এই ব্যাংকগুলোকে কার্যত দেউলিয়া করে দিয়েছে। অন্তত শেয়ারবাজারে তাদের মূল্য অনেক কমে গেছে, এবং সকল ব্যাংকের শরৎ সম্পদ মান নেগেটিভে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY Shipon tech bd