খুলনা পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সকাল থেকে অনুষ্ঠিত হলো পুলিশের ৫৯তম ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজ। এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন মোট ৫৪৬ জন প্রশিক্ষণার্থী, যারা দীর্ঘ প্রশিক্ষণের শেষ পর্যায়ে এই গৌরবোজ্জ্বল মুহূর্তে অংশগ্রহণ করে। সমাপনী কুচকাওয়াজের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকেন বাংলাদেশ পুলিশের অ্যাডিশনাল আইজি মোঃ মোস্তফা কামাল। তিনি ট্রেনিং সেন্টারের প্যারেড গ্রাউন্ডে এসে মনোমুগ্ধকর কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন এবং সালাম গ্রহণ করেন। কেন্দ্রীয় অতিথি হিসেবে তিনি কৃতি প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে পুরস্কার ও ট্রফি বিতরণ করেন। এই ব্যাচের মধ্যে বিভিন্ন বিভাগে পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে সর্ববিষয়ে চৌকস হিসেবে নির্বাচিত হন শেখ আবু তুরাব, এবং মাসকেট্রিতে শ্রেষ্ঠ হিসেবে মোঃ শাকিলকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
অ্যাডিশনাল আইজি তরুণ প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের উদ্দেশ্যে বলেন, জনগণের জীবন ও সম্পত্তির নিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, মানবিক মূল্যবোধ ও ন্যায্যতার প্রতিষ্ঠায় তাদের দায়িত্ব এখন আরও বাড়তি। তিনি বিশ্বাস করেন, এই প্রশিক্ষণে অর্জিত জ্ঞান, দক্ষতা ও মূল্যবোধ জীবনের পথপ্রদর্শক হবে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ পুলিশ জাতির অভ্যুত্থান, শান্তি, ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। পুলিশের দায়িত্ব কেবল আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা নয়, বরং সমাজে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা, মাদক নিয়ন্ত্রণ, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, নারী ও শিশুদের সুরক্ষা, এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিতেও তাদের অবদান অপরিহার্য। তিনি উল্লেখ করেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় শুরু হয়েছিল পুলিশের অসাম্প্রদায়িক ও সাহসীকতার ইতিহাসের প্রথম অধ্যায়, যেখানে রাজাকারবিরোধী প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন পুলিশ সদস্যরাই। এই আত্মত্যাগ ও সাহসিকতা আমাদের জাতীয় গর্ব। তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যত বাংলাদেশের নেতৃত্ব গড়তে এই প্রশিক্ষিত তরুণরাই মূল ভূমিকা পালন করবে। তারা জনগণের আস্থা অর্জন করে দেশের সেবায় নিয়োজিত হবে। পাশাপাশি, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ পুলিশ সুনামের সাথে অংশ নিচ্ছে। প্রধান অতিথি নবীনদের প্রতি নির্দেশনা দিয়ে বলেন, দেশের গৌরব রক্ষা, সমস্ত ভেদাভেদ ভুলে সমাজে ন্যায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য দায়িত্বশীলতা, সততা ও পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করুন।
উপস্থিত ছিলেন খুলনা পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের কমান্ড্যান্ট মোঃ মাহবুবুর রহমান ভুঁইয়া, জাহানাবাদ সেনানিবাসের কমান্ড্যান্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী সাজ্জাদ হোসেন, খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ রেজাউল হক, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ জুলফিকার আলী হায়দার, বিভিন্ন পর্যায়ের সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তারা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রশিক্ষণার্থীদের অভিভাবকগণ। অনুষ্ঠানে যোগ দেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, যারা তরুণ প্রজন্মের এই প্রশিক্ষণের গুরুত্ব গুরুত্ব দেয়। এটি ছিল একটি গর্বের মুহূর্ত, যেখানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এই তরুণরা ভবিষ্যতের प्रहरी হিসেবে নিজেদের প্রস্তুত করে উঠছে।
Leave a Reply