সরকারের প্রস্তাবিত নতুন টেলিযোগাযোগ নীতিমালার কারণে দেশের গ্রাহকদের জন্য ইন্টারনেট সেবার খরচ অন্তত ২০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশের ইন্টারনেট সেবাদাতারা। তারা মনে করছেন, এই দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্তটি দায়িত্বশীল নেতৃত্বের হাতে গেলে আরও ভালো হবে, কারণ এতে সাধারণ গ্রাহকদের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়বে। এই প্রসঙ্গে তারা রাজনৈতিক দলের হস্তক্ষেপের দাবিও জানিয়েছেন।
আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন (আইএসপিএবি) এই সব তথ্য জানান। সম্প্রতি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) একটি গাইডলাইন খসড়া তৈরি করেছে, যেখানে নতুন নিয়মের আওতায় ফিক্সড টেলিকম সার্ভিস প্রোভাইডারদের (এফটিএসপি) জন্য বিভিন্ন শর্ত আরোপ করা হয়েছে। এর বিরোধিতা করে আইএসপিএবি জানায়, নতুন গাইডলাইনে রেভিনিউ শেয়ার ৫.৫ শতাংশ, সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলের জন্য ১ শতাংশ এবং এফটিএসপি প্রকল্পের জন্য ক্রয়মূল্য ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে।
আইএসপিএবির সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, “সরকার টেলিযোগাযোগ খাতের উপর থেকে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে এবং এটি জনগণের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ। সরকার ভুল পথে হাঁটছে।” তিনি তুলনা করে দেখান, বর্তমানে বিদ্যমান নীতিতে সরকারের আয়ের হার ২১.৪৫ শতাংশ হলেও নতুন নীতিতে তা বেড়ে ৪০.২৫ শতাংশ হবে। তিনি বলেন, এতে শহর ও গ্রামে বৈষম্য আরও বৃদ্ধি পাবে।
আমিনুল হাকিম আরো অভিযোগ করে বলেন, “বৈষম্য আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার এই বিষয়গুলো বন্ধ করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু এখন আবার বৈষম্য বাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছে। ইন্টারনেটের দাম কমানোর কথা বললেও, সরকার নিজে দাম বাড়াচ্ছে।”
তাদের দাবি, স্টারলিংকের জন্য সরকার লাইসেন্স ফি ধার্য করেছে ১০ হাজার ডলার (প্রায় ১২ লাখ টাকা), তবে দেশের আইএসপিদের জন্য সেটি ধরা হয়েছে ২৫ লাখ টাকা। তিনি প্রশ্ন করেন, “স্টারলিংক সার্ভিসের জন্য এত সুবিধা কেন দিচ্ছে সরকার?”
সংবাদ সম্মেলনে আইএসপিএবি আরও জানায়, প্রস্তাবিত নতুন গাইডলাইনে মোবাইল অপারেটরদের জন্য ফিক্সড ওয়্যারলেস অ্যাকচেস এবং লাস্ট মাইল ফাইবার সংযোগের মাধ্যমে ফিক্সড কানেক্টিভিটির স্পষ্ট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যা দেশের স্বাভাবিক, দেশীয় ও স্বয়ংসম্পূর্ণ আইএসপিগুলোর জন্য চরম প্রতিযোগিতার সৃষ্টি করবে। পাশাপাশি সাধারণ গ্রাহকদের ওপর এর প্রভাব পড়বে, বলে জানিয়েছে তারা।
Leave a Reply