বাংলাদেশ ব্যাংক মন্দ খাতের খেলাপি ঋণগুলো অবলোপনে নতুন নির্দেশনা জারি করে সময়সীমা শिथিল করেছে। এর মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর জন্য ঋণ অবলোপনের প্রক্রিয়া সহজতর করা হয়েছে এবং এটি তাদের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনাকে আরও বাস্তবভিত্তিক করে তুলবে।
নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, মন্দ বা ক্ষতিগ্রস্ত মানে শ্রেণিকৃত ঋণগুলো অবলোপন করার জন্য এখন অতীতের মতো দুই বছরের পরিবর্তে আরও নমনীয় শর্ত যুক্ত করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, যারা ভবিষ্যতেও আদায়ের সম্ভাবনা ক্ষীণ, এমন ঋণগুলোও অবলোপন করা যাবে। একই সঙ্গে, অবলোপনের আগে কমপক্ষে ৩০ কর্মদিবস আগে ঋণগ্রহীতাকে লিখিত নোটিশ দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে, যাতে ঋণগ্রহীতারা তাদের দায়মুক্তির জন্য প্রস্তুতি নিতে পারেন। তবে, ঋণ অবলোপনের পরও, যদি পুরো অর্থ পরিশোধ না করেন, তবে তিনি এখনও খেলাপি হিসেবে বিবেচিত থাকবেন।
নতুন নিয়মে আরও বলা হয়েছে, মৃত ব্যক্তির নামে বা তার একক মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে নেওয়া ঋণ ব্যাংকের বিবেচনায় অবলোপন করতে পারবে, তবে মৃত ব্যক্তির উত্তরসূরি উপার্জনক্ষম কিনা তা অবশ্যই দেখা প্রয়োজন। পাশাপাশি, ব্যাংকের নিজস্ব নীতিমালা অনুযায়ী, অবলোপনকৃত ঋণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নগদ প্রণোদনা দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে, যেখানে প্রয়োজন হলে পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন নেওয়া যাবে।
বিমান ব্যাংক বলছে, ঋণ অবলোপনের আগে সম্পত্তি বিক্রি করার সমস্ত প্রচেষ্টা চালাতে হবে এবং আইনি পদক্ষেপও নিতে হবে। তবে, কিছু ঋণের ক্ষেত্রে—যেমন পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ বা মৃত ব্যক্তির নামে থাকা ঋণ—মামলার প্রয়োজন নেই। অবলোপনের আগে, ঋণের স্থিতি থেকে সুদ বাদ দিয়ে মূল অর্থের সমপরিমাণ প্রভিশনও সংরক্ষণ করতে হবে।
এছাড়া, নতুন নির্দেশনায় স্পষ্ট করা হয়েছে যে, কোনো ঋণ আংশিকভাবে অবলোপন করা যাবে না এবং ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন ছাড়া এ ধরনের সুযোগ নেই।
একশীর্ষ ব্যাংক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, ডলার সংকট কমে যাওয়ায় রিজার্ভ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে, ব্যাংকগুলোর আর্থিক সক্ষমতা বাড়ছে এবং তারা মন্দ ঋণ অবলোপনের ক্ষেত্রে শিথিলতা আনায় তাদের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা আরও কার্যকর হবে। এতে ব্যাংক খাতের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও সুসংহত হবে।
Leave a Reply