প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনার জন্য সরকার ব্যাপক পরিবর্তন ও স্বীকার করেছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, অনিয়ম ও দুর্নীতি রোধে আমাদের অধিকতর কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যার ফলে এখন অনেক কর্মকর্তার মধ্যে প্রকল্প পরিচালক হওয়ার আগ্রহ কমে গেছে। বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) সভার পর এক ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান তিনি।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা আরও বলেন, সব প্রকল্পের টেন্ডার প্রক্রিয়া এখন থেকে অনলাইনে পরিচালিত হবে। এরআগে, এই বিষয়টি শিগগিরই গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে যাতে পাশাপাশিসংক্রান্ত আইনের প্রণয়ন কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। এর ফলে কুচক্রী মহলের কট্টর আধিপত্য ও অবৈধ প্রভাব বন্ধ হয়ে যাবে। তিনি উল্লেখ করেন, কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তির প্রভাবের ভিত্তিতে নয়, বরং যোগ্য ও স্বচ্ছ প্রতিষ্ঠানগুলোকে মূল্যায়ন করে কাজ দেওয়া হবে। এছাড়া, যদি কোনো প্রতিষ্ঠান ঋণ খেলাপি বা কোনো অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকে, সেই প্রতিষ্ঠানকে দরপত্রে অংশগ্রহণের জন্য বিবেচনা করা হবে না।
ওই ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক গৃহীত এসব পদক্ষেপের ফলে প্রকল্প বাস্তবায়নের বিভিন্ন স্তরে স্বচ্ছতার নতুন যুগ শুরু হয়েছে। এর মাধ্যমে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি ও অনিয়মরোধ সম্ভব হয়েছে। ফলে, সরকার এখনপ্রতিষ্ঠান ভিত্তিক প্রকল্প পরিচালনার জন্য আগ্রহ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে।
অন্যদিকে জানা গেছে, এখন থেকে কৃষি জমি বা খাস জমি অধিগ্রহণের পরিবর্তে সরকার অব্যবহৃত বা অপ্রয়োজনীয় জমি খুঁজে চিহ্নিত করবে। এর জন্য মন্ত্রণালয় ও উপদেষ্টাদের দ্বারা তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। তারা দেশের সব সরকারি খাস জমির পরিমাণ ও দখল দখলি বিষয়ে পর্যাপ্ত তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে দ্রুত প্রতিবেদন দেবে।
সেই সঙ্গে, নতুন সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত আইন সংশ্লিষ্ট পরিবেশের সঙ্গে মানানসই করে চূড়ান্ত করা হয়েছে। ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা দেশের বাইরে চলে যাওয়ায় এ ক্ষেত্রে কোনও বাধা থাকেনি। এই আইনের মাধ্যমে দেশীয় প্রকল্প ও ব্যবসায়ীদের স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা হবে।
আরো জানানো হয়, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে ধীরগতি কেন হওয়া, তা পরবর্তীতে আলোচনা করে সমাধান করা হবে। তাছাড়া, এলডিসি দেশে উত্তরণের পর সহজ শর্তে ঋণ প্রাপ্তির হয়রানি কমে যাবে। সরকার আগামী সপ্তাহে এসব বিষয়ে আলোচনা করতে একটি বৈঠক করবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে, সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে, সম্ভবিত খাতে দ্রুত ও সহজ শর্তে ঋণ নিয়ে উন্নয়ন পরিকল্পনা সম্পন্ন করা, যাতে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি অব্যাহত থাকে।
Leave a Reply