সর্বশেষঃ
সাবেক ১২ মন্ত্রীসহ ১৪ জনকে আজ হাজির করা হচ্ছে ট্রাইব্যুনালে দীপু মনির সুপারিশে মাউশিতে তিন হাজার পদায়ন রুশ হামলার আশঙ্কায় কিয়েভে দূতাবাস বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্র তহবিল না দিলে যুদ্ধে হারবে ইউক্রেন, স্বীকারোক্তি জেলেনস্কির ৬ বছরে মুজিববর্ষ উদযাপনে আওয়ামী লীগ সরকারের ব্যয় ১ হাজার ২৬১ কোটি টাকা আন্তর্জাতিক অপরাধ অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন, রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের বিধান রাখা হয়নি আইসিটি’র বিচারকাজ ধারণ ও সম্প্রচারের অনুমতিসহ আইন সংশোধনের অধ্যাদেশ অনুমোদন একাত্তরের ভুল প্রমাণিত হলে জাতির কাছে ক্ষমা চাইব: জামায়াত আমির নতুন আইজিপি বাহারুল আলম, ডিএমপি কমিশনার সাজ্জাদ আলী ‘ফিলিস্তিনের পতন হলে ইরান, সৌদি ও তুরস্ক হবে পরবর্তী টার্গেট’ ১৫ বছর পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া বৃহস্পতিবার ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়
সাবেক ১২ মন্ত্রীসহ ১৪ জনকে আজ হাজির করা হচ্ছে ট্রাইব্যুনালে

সাবেক ১২ মন্ত্রীসহ ১৪ জনকে আজ হাজির করা হচ্ছে ট্রাইব্যুনালে

জুলাই-আগস্টের গণহত্যার মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হচ্ছে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ১২ মন্ত্রীসহ ১৪ আসামিকে। 

আজ সোমবার সকালে কড়া নিরাপত্তায় তাদেরকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হবে। এদিকে গণহত্যার মামলার তদন্তের সময় বৃদ্ধির জন্য আবেদন জানাবে তদন্ত সংস্থা। সংস্থার পক্ষে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট এম তাজুল ইসলাম আজ এ আবেদন জানাবেন। বিচারপতি মো. গোলাম মূর্তজা মজুমদারের সভাপতিত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালে আবেদনের উপর শুনানি হবে। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

ট্রাইব্যুনালে যাদেরকে হাজির করা হচ্ছে এরা হলেন: আনিসুল হক, ড. আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, সালমান এফ রহমান, গোলাম দস্তগীর গাজী, কামাল আহমেদ মজুমদার, লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান, ড. দীপু মনি, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, জুনাইদ আহমেদ পলক, তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী (বীর বিক্রম), সাবেক বিচারপতি এইচ এম শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক ও সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট এম তাজুল ইসলাম ইত্তেফাককে বলেন, গণহত্যার মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারিকৃতদের মধ্যে গ্রেফতার হওয়া ১৪ অভিযুক্তকে আজ ট্রাইব্যুনালে হাজির করার জন্য আদেশ রয়েছে। ঐ আদেশ মোতাবেক কারা কর্তৃপক্ষ তাদেরকে হাজির করবে। তিনি বলেন, গণহত্যার মামলা তদন্তের জন্য সময় দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল। যেহেতু তদন্ত শেষ হয়নি সেহেতু সময় বৃদ্ধির আবেদন দেওয়া হবে। কোটা সংস্কার ও সরকার পতনের আন্দোলন দমাতে নিরস্ত্র ছাত্র-জনতাকে সমূলে বা আংশিক নির্মূলের লক্ষ্যে হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের মামলায় গত ১৭ অক্টোবর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল। ২৭ অক্টোবর পরোয়ানাভুক্তদের মধ্যে ২০ জনকে ট্রাইব্যুনালের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। এদের মধ্যে ১৪ জনকে আজ এবং ছয় পুলিশ কর্মকর্তা সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, বরখাস্ত মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসান, সাবেক ঢাকা জেলার এডিসি (এসপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত ছিলেন) আব্দুল্লাহ হিল কাফী, সাবেক এডিসি আরাফাতুল ইসলাম, যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান এবং গুলশান থানার সাবেক ওসি মাজহারুল ইসলামকে ২০ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ রয়েছে। এদিকে ২৭ অক্টোবর ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, র‍্যাবের সাবেক ডিজি হারুন-অর রশিদ, এসবির সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলাম, ডিবির সাবেক প্রধান হারুনুর রশিদ, বিপ্লব কুমার সরকার, সাবেক এডিসি ইকবাল হোসেনসহ আরো ১৭ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করা হয়।

তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশনের অভিযোগে যা বলা হয়েছে : কোটা সংস্কারের অহিংস আন্দোলন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে সহিংস হয়ে উঠে। একই সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরস্ত্র ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর নির্মমভাবে হামলা চালায়। এই হামলার ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকাসহ দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামে। সংঘর্ষ হয় ছাত্রলীগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে। ১৬ জুলাই রংপুরে পুলিশের গুলিতে শিক্ষার্থী আবু সাঈদসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আরও ছয় জন মারা যান। ফলে কোটা সংস্কার আন্দোলন সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। এই আন্দোলনে একসময় শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ যোগ দেয়। কমপ্লিট শাটডাউন, অসহযোগ আন্দোলন দমাতে জারি করা হয় কারফিউ। কিন্তু তাতে দমে যায়নি ছাত্র-জনতা। এই ছাত্র-জনতাকে সমূলে বা আংশিক নির্মূলের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নির্দেশনায় নির্বিচারে গুলি চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এর সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠন এবং ১৪ দলীয় জোটের ক্যাডার বাহিনী যোগ দেয়। এতে দেড় সহস্রাধিক ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হয়। আহত হয় ২৩ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী ও জনতা। আহত অনেকে চিরতরে পঙ্গু ও দৃষ্টি শক্তি হারিয়েছেন।

এর পরেও দমানো যায়নি আন্দোলনকারীদের। তারা ৫ আগস্ট গণভবনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। পদত্যাগ করে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পরেও পূর্ব নির্দেশনা অনুযায়ী ঐদিন গভীর রাত পর্যন্ত হত্যা, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী এবং ১৪ দলীয় জোটের ক্যাডাররা। এসব অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে জুলাই-আগস্ট গণহত্যার মামলায়।

প্রসঙ্গত গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যাত্রা শুরু করে। এরপর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, এমপি, বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে শত শত হত্যা মামলা দায়ের হয়। এর মধ্যে বেশ কিছু মামলায় গ্রেফতার হয়ে আগস্ট মাস থেকে কারাগারে আছেন ট্রাইব্যুনালের পরোয়ানাভুক্ত আসামিরা। অক্টোবর মাসে সরকার পুনর্গঠন করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির মধ্য দিয়ে গত ১৭ অক্টোবর যাত্রা শুরু করে ট্রাইব্যুনাল। ইতিমধ্যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি করতে ইন্টারপোলের কাছে চিঠি দিয়েছে চিফ প্রসিকিউটর।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY Shipon tech bd