চুয়াডাঙ্গায় এখন তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে হিমশীতল বাতাস, কুয়াশা এবং মেঘাচ্ছন্ন আকাশের কারণে। সূর্যের দেখা মিলছে না, ফলে জনজীবনে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক অস্থিরতা। অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষগুলো শীতের তীব্রতা মোকাবেলা করতে হিমশিম খাচ্ছেন। সোমবার সকাল ৬টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, উত্তরের ঠাণ্ডা বাতাস এবং ঘন কুয়াশা সকাল থেকে দিন পর্যন্ত শীতের তীব্রতা বাড়িয়ে তুলছে। সূর্যের দেখা না পাওয়ায় শীত আরও বেশি অনুভূত হচ্ছে। বাতাসের তীব্রতা এবং প্রবল ঠাণ্ডার কারণে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। ক্ষুধার্ত ও ছিন্নমূল পরিবারগুলো সকাল থেকে রাত পর্যন্ত খড়কুটো জ্বালিয়ে উষ্ণতা পাওয়ার চেষ্টা করছেন, তবে শীতের কারণে তাদের কষ্ট আরও বাড়ছে। এর পাশাপাশি, সড়কে মানুষের উপস্থিতি কমে আসায় জীবনধারা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শ্রমজীবী মানুষজন কর্মহীন হয়ে পড়েছেন এবং বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। তীব্র শীতের ফলশ্রুতিতে বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা ধান চাষে প্রভাব ফেলতে পারে। হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত রোগের প্রকোপ বেড়ে গেছে। ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন শিশুরা ও বৃদ্ধরা, যেখানে চিকিৎসা সেবা প্রদানে চিকিৎসকরা হিমশিম খাচ্ছেন। রোগীর চাপ এত বেশি যে, শয্যার অভাব এবং চিকিৎসাকক্ষে বরান্দা ও মেঝেতে রোগীদের চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। হাতিকাটা গ্রামের ইজিবাইক চালক নুর ইসলাম বলেন, “সকাল থেকে গাড়ি নিয়ে বাড়ি থেকে বের হচ্ছি, কিন্তু ভাড়া পাচ্ছি না। সড়কে উপস্থিতি কম থাকায় আয় কমে গেছে। শীত আর পেটের তাগিদে কষ্টে আছি।” অন্য এক পথচারী আব্দুল হালিম জানান, “শীত এতই তীব্র যে, শরীরে ছয়টি পোশাক পরেও ঠাণ্ডা কমছে না। শরীরের বিভিন্ন অংশ জমে যাচ্ছে আর ভীষণ কষ্ট হচ্ছে।” বৃদ্ধ ভ্যানচালক হাসমত আলি বলেন, “গরম চায়ের সঙ্গে শীতের রাত কাটাতে হচ্ছে। গরীবের জন্য পর্যাপ্ত গরম কাপড় থাকছে না, তাই এখনো পর্যন্ত কোন কম্বল পাইনি।” চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক আলতাফ হোসেন জানান, আকাশ মেঘলা, কুয়াশাচ্ছন্ন ও উত্তরের ঠাণ্ডা বাতাসের কারণে শীতের তীব্রতা আরও কিছুদিন থাকতে পারে। তিনি জানান, শীতের মাত্রা আরও কমতে পারে, তাই সূর্যের দেখা মিলাও একদম কঠিন হতে পারে। এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলেও শীতের দাপট কিছুদিন অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা করছেন আবহাওয়াবিদরা।
Leave a Reply