সম্প্রতি দেশের বাইরে একটি পডকাস্টে লম্বা সময় ধরে কথা বলেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের শীর্ষ তারকা সাকিব আল হাসান। সেখানে তিনি তার ক্যারিয়ারের নানা দিক বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন। এক পর্যায়ে ২০১৯ সালের বিশ্বকাপের কথা ওঠে। তখন উপস্থাপক জিজ্ঞেস করেন, বিশ্বকাপের আগেই কি তিনি টের পেয়েছিলেন যে এই বিশ্বকাপ তারই জন্য আসছে।
সাকিব উত্তর দেন, ‘কিছুটা ধারণা ছিল। আইপিএলের আগের মৌসুমে আমি সব ম্যাচ খেলেছি (সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে). ফাইনালও খেলেছিলাম, কিন্তু জিততে পারেনি team. ওয়ার্নার তখন অধিনায়ক ছিলেন, তবে তিনি মৌসুমের মাঝপথে খেলতে পারেননি। পরের মৌসুমে তিনি ফিরে আসেন। কেইন উইলিয়ামসন দারুণ ফর্মে ছিলেন। জনি বেয়ারস্টো ও রশিদ খানও দলে ছিলেন। আমি মনে করি, তাদের প্রথম ম্যাচ খেলেছিল।
সাকিব আরও বলেন, ‘আমি দেখছিলাম, যদি কেউ ইনজুরিতে না পড়ে তাহলে আমার এই বছর দলে থাকার সম্ভাবনা কম। তখন আমি ভাবলাম, কেন নিজেকে প্রস্তুত করছি না আমার সামর্থ্য অনুযায়ী? কারণ দুই মাস পরই বিশ্বকাপ। আমি হোটেল রুমে বসে নিজেকে অনুপ্রাণিত করছি, ভাবছিলাম, আমি যা চাই সেটি অর্জন করতে আমি বর্তমানে যথেষ্ট পরিশ্রম করছি না। তাই আমি নিজের সব কিছু উজাড় করে দিয়ে ট্রেনিং শুরু করি। এক মাসের ট্রেনিং শেষে আমার ওজন কমে যায় কেউ কেউ দেখেছেন। মূল কোচ টম মুডি জিজ্ঞেস করেন, কী হয়েছ, আমি বলি, দেখবেন বিশ্বকাপে। আমি সবাইকে দেখিয়ে দেব, আমি কী বলতে পারি। আমি ভেতর থেকে প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠি। দুই মাসের ট্রেনিং শেষে আমি আয়ারল্যান্ডে গেলে তিনটি ফিফটি করি। তবে ফাইনালের আগে ইনজুরির কারণে ফাইনাল খেলতে পারিনি, আমি কোনো সুযোগ হাতছাড়া করিনি।
সাকিব আরও বলেন, ‘২০১৯ সালের বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে আমি ৭৫ রান করেছিলাম। নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ম্যাচে মনে হয় ৬০ রান ছিল। আর ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথমবার জোফরা আর্চারের মুখোমুখি হয়েছি। সে ১৫০ কিমি/ঘণ্টা+ গতিতে বল করত। কার্ডিফে আমরা খেলছিলাম। সৌম্য সরকার তখন আউট হয়ে গিয়েছিল, বল স্টাম্পে হিট করে বাউন্ডারিতে চলে যায়। আমি পরের ব্যাটার। তাকে মোকাবেলা করে একটি ছয় মারি। কারণ সে শরীর তাক করে বল করছিল, আমি হুক পুল করে বলছিলাম। এরপর আমি ভাবলাম, হ্যাঁ, আমি পারব। এই টুর্নামেন্টের সবচেয়ে কঠিন বোলারকে আমি মোকাবেলা করেছি, ফলত বাকিরা একদম সহজ।
সেঞ্চুরি করার পর যেনো খুব বেশি উদযাপন না করাটা নিয়ে সাকিব বলেন, ‘এর কারণ ছিল এই বিশ্বকাপে আমি একটি লেখা লিখে রেখেছিলাম, যাতে বলা হয়েছে আমি প্রতিটি বল আমার দেশের জন্য খেলব—নিজের জন্য নয়। এটি সম্পূর্ণ দলের জন্য।’
Leave a Reply