বিলুপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ সদস্যদের বিদেশ থেকে আমদানি করা ৩১টি বিলাসবহুল গাড়ি এখন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরে হস্তান্তর করার নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বুধবার (১২ নভেম্বর) এক বিশেষ আদেশের মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে এনবিআর জানায়, এই গাড়িগুলোর শুল্কমুক্ত সুবিধা নিয়ে কিছু প্রশ্ন ওঠে—বিশেষ করে বিলুপ্ত এই সংসদ সদস্যরা শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানি করেছিলেন কিনা। চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস থেকে এর ব্যাপারে নির্দেশনা চাওয়া হয়। এর জবাবে জানা যায়, এই গাড়িগুলোর খালাসের জন্য কোনো শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রযোজ্য নয়; বরং আমদানিকারকদের সাধারণ হারে শুল্ক ও কর দিতে হবে। গত বছর ৮ ডিসেম্বর এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসকে আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, শুল্কমুক্ত এই ৩১টি বিলাসী গাড়ির মোট শুল্ক ও করের পরিমাণ প্রায় ২৬৯ কোটি ৬১ লাখ ৮৯ হাজার ৬০০ টাকা। এক গাড়ির সর্বোচ্চ শুল্ক পরিশোধের হার ৯ কোটি ৪৪ লাখ ৮৩ হাজার ৩০০ টাকা, আর সর্বনিম্ন শুল্ক ৮ কোটি ৬২ লাখ ৬৭ হাজার ৪০০ টাকা।
এ কারণে, সব শুল্ক ও কর পরিশোধের পরও গাড়িগুলো আমদানিকারকরা খালাস করেনি। এ কারণে, কাস্টমস আইন, ২০২৩ এর ধারা ৯৪(৩) অনুসারে, এই গাড়িগুলো নিলামে তোলা হয়। কিন্তু নিলামকারীরা জোথযুক্ত মূল্য বিড না করায় গাড়িগুলোর বিক্রি সম্ভব হয়নি। কম দাম হওয়ার কারণে মেয়াদকালের মধ্যে বিক্রি সম্ভব হয়নি বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর এই বিষয়টি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় আলোচনা হয়, যেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এসব অতি মূল্যবান গাড়িগুলো জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তর করা হবে।
অন্যদিকে, ভবিষ্যতে যদি আমদানিকারকরা নিয়ম মেনে সব শুল্ক ও কর পরিশোধ করে এসব গাড়ি খালাস করতে চান, তাহলে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস শুল্কায়নযোগ্য মূল্য নির্ধারণ ও আইন অনুসারে কার্যক্রম সম্পন্ন করবে। এর মাধ্যমে গাড়িগুলো আইনানুগভাবে খালাসের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শুল্ক ও কর আদায় সম্পন্ন হলে, এই গাড়িগুলো সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। ফলে, এই বিলাসবহুল যানবাহনগুলো সরকারি কাজে ব্যবহৃত হবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করা সম্ভব হবে।
Leave a Reply