আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম দিনের খেলা শেষে বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস আরো বেড়ে গেছে। দ্বিতীয় দিন মাঠে গিয়ে তারা পুরো ম্যাচের দিকপাল হয়ে উঠেছে। টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান মাহমুদুল হাসানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসের সঙ্গে সাদমান ইসমালের ৫০ প্লাস ফিফটি এবং মুমিনুল হকের সেঞ্চুরির সঙ্গে আজকের দিনটি ছিল বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আজ ব্যাটিংয়ে নামে আয়ারল্যান্ড লম্বা লড়াই করতে পারেনি, শুরুতেই তাদের কয়েকটি উইকেট পড়ে। প্রথম দুই ওভারে তারা মাত্র ২.২ রান করতে সক্ষম হয়। এরপর বাকি সময়ে তাদের ব্যাটসম্যানরা খুব বেশি সংগ্রহ করতে পারেননি। তবে শেষ পর্যন্ত তারা প্রথম ইনিংসে ২৮৬ রান করে, এর মধ্যে দুই উইকেট হারায়।
এরপর, বাংলাদেশের ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় এবং সাদমান ইসলাম দুর্দান্ত শুরু করেন। তাদের পাওয়া ১৬৮ রানের জুটি বাংলাদেশের কথার মতো করে উপভোগ্য করে তোলে। সাদমান ১০৪ বলের মোকাবিলায় ৮০ রানে অবসর নেন।
মাহমুদুল হাসান জয় ১৬৯ রানের ইনিংস খেলেন, যেখানে তিনি ১৪টি চার ও ৪টি ছয় মারেন। এটি তার ক্যারিয়ার সেঞ্চুরি, যা দেশের মাটিতে তার প্রথম। অন্যদিকে, মুমিনুল হক অপরাজিত থাকেন ৮০ রানে, ১২৪ বলে। এই দলের বড় ধরনের পারফরম্যান্সের ফলে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩৩৮ রান, এবং দিনশেষে তাদের লিড বেড়ে হয় ৫২ রানে।
জয়ের ৭৭তম ওভারে সিঙ্গেল নিয়ে ক্যারিয়ার সেরা রান করে যাত্রা শুরু করেন। এরপর, তিনি আরো ধারাবাহিকভাবে ব্যাট করেন। কোঁচ উপভোগ্য দুই ছক্কা ও চার মারেন কুর্টিস ক্যাম্ফারকে, যার মাধ্যমে তিনি দেড়শো পার করে যান। প্রথম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে তিনি ১৬৯ রানে অপরাজিত থাকেন।
মাহমুদুল হাসান জয় ও মুমিনুল হকের পারফরম্যান্স প্রশংসনীয়। জয় গত ছয় ইনিংসে খুব বেশি ফর্মে ছিলেন না, তবে আজ তিনি প্রথম স্পেশাল ইনিংস খেলতে পারলেন। ৭৭তম ওভারে ৭৭ রান করে ক্যারিয়ার সেরা অর্জন করে নিলেন। এরপর কিছুক্ষণ বিরতি নিয়ে চাপমুক্ত হয়ে তিনি আরো রানের রেকর্ড গড়েন। এই ইনিংসে তিনি ৯টি চার ও ১টি ছয়সহ ১৬৯ রান করেন।
অন্য দিকে, মুমিনুল হক এই ম্যাচে এক নতুন আত্মবিশ্বাসের ঝলক দেখিয়েছেন। প্রথম সেঞ্চুরির পর তার সর্বোচ্চ ফর্ম ছিল ৪৭ রান, তবে আজ তিনি ৭৫ বলে ২৩তম ফিফটি করে উন্নতি করেন। তার এই অনন্য সফলতার জন্য তার আত্মবিশ্বাস আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে।
আসলে, জয় আয়ারল্যান্ড সিরিজ দিয়ে ফিরে এসেছেন বাংলাদেশের দলে, এবং আজকের এই অসাধারণ শতকের মধ্য দিয়ে তার প্রত্যাবর্তন পূর্ণতা পেল। ২০২২ সালের মার্চে ডারবানে টেস্টে নিজের চতুর্থ ইনিংসে প্রথম সেঞ্চুরি করেছিলেন জয়। আবারও ১৯০ বলে দ্বিতীয় শতক তুলে নেন তিনি।
সেঞ্চুরি করে জয় প্রমাণ করেন যে তিনি এখন আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী। ওপেনিংয়ে তার সঙ্গী সাদমান শতক পেয়েছিলেন না হলেও, জয় এই পথে হেঁটেছেন। তার ইনিংসে ছিল ৯টি চার ও একটি ছয়।
প্রথম সেঞ্চুরির পর, জয় ৩০ ইনিংসে মোট কেবল তিনটি হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন, যা তার ধারাবাহিকতার অভাবের প্রমাণ। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত ফর্মে থাকায় তাকে দলে ফেরানো হয়। সেই ফর্ম এখন তার প্রথম ও দ্বিতীয় সেঞ্চুরিতে পরিণত হলো। তাদের উদ্বোধনী জুটিতে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৬৮ রান, যা সম্প্রতি ১০ বছরের মধ্যে সব থেকে উচ্চ।
এর আগে, জয়-সাদমানের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের জুটি ভেঙে যায় বাঁহাতি আইরিশ স্পিনার ম্যাথু হামপ্রিসের বলে। কিছুটা বাইরের বল কাট করতে গিয়ে সাদমান ভুল করেন। বল তার ব্যাটের আলতো ছোঁয়া নিয়ে উইকেটরক্ষক লরকান টাকারের হাতে ধরা পড়ে। আম্পায়ার initially অস্বীকৃতি দিলেও, পরে রিভিউয়ে জীবনের প্রথম হারেন তিনি। ১০৪ বলে ৯ চার ও ১ ছক্কায় তিনি ৮০ রানে থামে।
Leave a Reply