সর্বশেষঃ
সাবেক ১২ মন্ত্রীসহ ১৪ জনকে আজ হাজির করা হচ্ছে ট্রাইব্যুনালে দীপু মনির সুপারিশে মাউশিতে তিন হাজার পদায়ন হিরো আলমের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি আন্তর্জাতিক অ্যাওয়ার্ড জিতল ‘সাইয়ারা’ বর্ষীয়ান অভিনেত্রী ভদ্রা বসু আর নেই অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি ভারতের সর্বকনিষ্ঠ বিধায়ক মৈথিলী ঠাকুর আইরিশদের ইনিংস ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজে শীর্ষে বাংলাদেশ কপিলমুনি কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধনীতে ধানের শীষ প্রার্থী বাপ্পী বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হবে নারীর কাবাডি বিশ্বকাপের দল ঘোষণা সোহানের দ্রুততম সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশ জিতে গেলো হারিয়েও নজরকাড়া পারফরম্যান্স আসিফের মন্তব্যে বিসিবি সভাপতির দুঃখ প্রকাশ ও বাফুফের প্রতিক্রিয়া
আন্ডারওয়ার্ল্ড দ্বন্দ্বে ২ লাখ টাকার চুক্তিতে সন্ত্রাসী মামুনের খুন: ডিবি পুলিশ

আন্ডারওয়ার্ল্ড দ্বন্দ্বে ২ লাখ টাকার চুক্তিতে সন্ত্রাসী মামুনের খুন: ডিবি পুলিশ

রাজধানীর পুরান ঢাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনের (৫৫) হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত দুই শুটারসহ মোট পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেপ্তার দুই শুটার হলেন ফারুক ওরফে কুত্তা ফারুক এবং রবিন। আর তিনজন হলেন ইউসুফ, রুবেল এবং শামীম।

ডিবি জানায়, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে মূল চালিকাশক্তি ছিল আন্ডারওয়ার্ল্ডের পরিচিত জুটি ইমন-মামুনের মধ্যে চলমান দ্বন্দ্ব। এই দ্বন্দ্ব থেকেই ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী হিসেবে পরিচিত রনি, যিনি একসময় মুদি দোকানি ছিলেন এবং বর্তমানে কাফরুলের বাসিন্দা ও শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত। রনি প্রথম থেকেই মামুন হত্যা করতে ইমনের হয়ে নিজে দুই লাখ টাকা দেন এবং অস্ত্র সরবরাহ করেন। এর পেছনে মূল উদ্দেশ্য ছিল আন্ডারওয়ার্ল্ডে আধিপত্য বিস্তার করা। তবে রনি এখনো পলাতক, তাঁকে খুঁজে বের করতে অভিযান চালানো হচ্ছে।

আজ বুধবার (১২ নভেম্বর) ডিবির মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম জানান, গ্রেপ্তার দুজন পেশাদার শুটার। তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি পিস্তল, নগদ টাকা এবং হত্যায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে।

শফিকুল ইসলাম বলেন, ১০ নভেম্বর ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে গুলি চালায় দুই অস্ত্রধারী। এতে গুরুতর আহত হয় তারিক সাইফ মামুন। পরে চিকিৎসকরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত্যুবরণ করেন। ঘটনার পরপরই তদন্ত শুরু করে ডিবি। আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের শনাক্ত করে সিলেট, নরসিংদী ও ঢাকায় বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মোট পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও বলা হয়, মঙ্গলবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে নরসিংদীর ভেলানগর থেকে গ্রেপ্তার হয় ফারুক, রবিন, শামীম ও রুবেল। তাদের তল্লাশি করে এক লক্ষ৫৩ হাজার ৬৪০ টাকা উদ্ধার করা হয়, যা হত্যাকাণ্ডের পারিশ্রমিক হিসেবে রনি দিয়েছিলেন।

ডিবি জানিয়েছে, ফারুক ও রবিন হত্যার পর রনি দ্বারা ব্যবহৃত অস্ত্র ও গুলি রেন্ট-এ-কারচালক রুবেলের কাছে দিয়ে যায়। পরে রুবেল অস্ত্রগুলো পাইয়ে দেয় ইউসুফের বাসায় যেখানে লুকানো ছিল। ইউসুফের ঘর থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, ছয় রাউন্ড গুলি এবং দুটো ম্যাগাজিন উদ্ধার হয়। ইউসুফ ও রুবেল স্বীকার করেছেন, হত্যার দিন অস্ত্রভর্তি ব্যাগ ইউসুফের কাছে রেখেছিলেন।

ডিবির অনুসন্ধানে জানা গেছে, মামুন হত্যার পরিকল্পনা অনেক দিন ধরে চলে আসছিল। শীর্ষ ত্রাস ইমনের ঘনিষ্ঠ রনি ও তাঁর সহযোগী ফারুক বেশ কয়েকবার মামুনকে হত্যা করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। তবে ১০ নভেম্বর, মামুনের আদালতে হাজিরার দিন, রনি এই হামলার জন্য পরিকল্পনা সম্পন্ন করে। তার আগে, ওঁরা একসঙ্গে পরিকল্পনার চূড়ান্ত নির্দেশনা দেন। সেই সকালেই রনি রবিনকে আদালত এলাকায় যেতে বলে। রবিন একটি মোটরসাইকেলে করে সেই এলাকায় পৌঁছে। একইভাবে, ফারুক, শামীম ও রুবেলও সেই স্থানে উপস্থিত হয়। প্রথমে সাবেক দায়িত্ব ছিল সুমন ও ফারুক গুলি চালানো। কিন্তু, রনির সঙ্গে সাবেক সহযোগী সুমনের বিবাদ হলে রনি তার কাছ থেকে দুটি পিস্তল নিয়ে এই দুজনকে দেন।

গবেষণায় দেখা যায়, রনির নির্দেশে মামুনের চলাফেরা মনিটরিং করেছিলেন কামাল। মামুন আদালতে পৌঁছালে, কামাল সংকেত দেয়। এরপর, ফারুক ও রবিন ধারাদিতে গুলি চালায়। গুলি চলে যাওয়ার পরে, তারা দ্রুত এলাকা ত্যাগ করে রায়েরবাজারে যায়। এরপর রনি নির্দেশ দেন, অস্ত্রগুলো রুবেলের কাছে জমা দিতে। পরে, রনি পারিশ্রমিক হিসেবে দুই লাখ টাকা দেয়।

অর্থাৎ, পরিকল্পনাকারীরা ঢাকা ছেড়ে সিলেটের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করে। সিলেটে পৌঁছে ভারতের সীমান্ত পেরোবার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন। এরপর, সাতক্ষীরার পথে ঢাকায় ফেরার সময়, গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে ধরা পড়েন।

ডিবির একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ড আন্ডারওয়ার্ল্ডের পুরোনো দ্বন্দ্বেরই ফল। মামুন আর ইমন দুইজনই শীর্ষ সন্ত্রাসী, যারা ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের দখল নিয়ে লড়াই করছিল। আমরা এই মূল পরিকল্পনাকারী রনি ও তার সহযোগীদের ধরার জন্য অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি।’

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY Shipon tech bd