প্রধান উপদেষ্টা আহ্বান জানালে বিএনপি আলোচনা করতে রাজি আছে বলে জানিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা মনে করেছিলাম জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রেফারির ভূমিকা পালন করবে। অন্তর্বর্তী সরকার সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে নিজেদের দায়িত্ব পালন করবে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে পরিস্থিতি পরিচালনা করবে। কিন্তু এখন দেখছি, আপনাদের পক্ষ থেকে রেফারি হয়ে একটি গোল দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর বলছেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে সাত দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, না হলে নিজেদের সিদ্ধান্ত নেবে।
শনিবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ছাত্রদলের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের ৫০ বছর পূর্তির আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, সরকারকে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু ভোটের জন্য সব রকম চেষ্টা করার আহ্বান জানাই। আমরা স্বেচ্ছা समर्थन দিচ্ছি, তবে সেটি সীমারেখার মধ্যে। যদি মনে করেন, অন্য রাজনৈতিক দল দিয়ে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন, তাহলে প্রশ্ন হলো, তারা কারা? অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা যদি আমাদের কাউন্সিলে ডেকে নিয়ে আলোচনা করতে আহ্বান জানায়, আমরা সব সময় আলোচনায় আগ্রহী। তবে অন্য এক দলকে দিয়ে কেন আমাদের আহ্বান জানানো হচ্ছে?
অন্তর্বর্তী সরকারের এইভাবে সময় বেধে দেওয়ার ক্ষমতা নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, আপনারা কোনো নির্বাচিত সরকার নয়, এটাই মনে রাখা জরুরি। আপনাদের কাছে এত ক্ষমতা নেই যে, আমাদের ওপর ডিক্টেট করার অধিকার রাখেন। যদি সাত দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত না হয়, আমরা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নেব। এত শক্তি দেখানোর জন্য আপনাদের মানা হয় না।
জামায়াতকে লক্ষ্য করে সালাহউদ্দিন বলেন, আপনি ১৯৭১ সালের পরিণতিতে যা করেছিলেন, ১৯৪৭ সালে শুরু করেছিলেন, জাতীয় পার্টির হাত ধরে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের পাশে ছিলেন—এমন সব কর্মকাণ্ডের ফলে দেশের পরিস্থিতি কী রকম হবে? আবার যদি আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগ দিয়ে পুনরায় ক্ষমতা চান, তাহলে কি হবে? এরাজ্যেতো নানা অগণতান্ত্রিক শক্তি উৎসাহিত হবে। এর ফলে বাংলাদেশে অগণতান্ত্রিক কার্যকলাপ বাড়বে।
তিনি সতর্ক করে বলেন, যদি আপনি বলতে চান, আমাদের কিছু করতে হবে, ভাড়া ভাতে ছাই ছিটিয়ে দেবেন—এমন ভাবনা দেশের মানুষ আর কখনো গ্রহণ করবে না। সুযোগ এড়িয়ে যান।
জামায়াতের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনি চাইলে ঘি খেতে পারেন। কিন্তু আমরা দেশের গণতন্ত্রের সংগ্রামে রাজপথের আন্দোলন চালিয়ে যাব, অগণতান্ত্রিক ও উত্তপ্ত পরিস্থিতি আর সৃষ্টি হতে দেব না। সরকারের উপর আল্টিমেটাম দিয়েছেন কেউ? তাহলে তারা কি এই আল্টিমেটাম দিয়েছে? সরকার তো আপনার কথামত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে সবসময় মেনে চলেছে। আপনারাও একই সঙ্গে সুর মিলিয়ে কথা বলছেন।
ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির এর পরিচালনায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক আমানুল্লাহ আমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায়সহ অন্যান্যরা।
Leave a Reply