বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি জানান, সংস্কার সনদে স্বাক্ষরকারী দলগুলোর ঐক্যের মাধ্যমে আমরা একটি গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই। গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধারে সবাইকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) শিল্পকলা একাডেমিতে দৈনিক নয়া দিগন্তের ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, নয়া দিগন্ত আমাদের জন্য এক সংগ্রামের নাম। ফ্যাসিবাদী শাসনামলে এই পত্রিকার সাংবাদিক, সম্পাদক, প্রকাশক ও কর্মীরা অক্লান্ত নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। তারপরও তারা ধৈর্য্য, সতর্কতা এবং বিচক্ষণতার সঙ্গে সত্যের সংবাদ পরিবেশন করে গেছেন।
তিনি আরও বলেন, স্বৈরাচারী শাসনামলে এই পত্রিকার সাংবাদিকদের ওপর নেমে আসে ভয়াবহ দমন-পীড়ন। তবুও তারা গণমানুষের চেতনা ও সত্যের পক্ষে আওয়াজ তুলে গেছেন। এই সাহসিকতা ও পেশাদারিত্বের জন্য তিনি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
মির্জা ফখরুল উল্লেখ করেন, গণতন্ত্রকামী শক্তিগুলোর ওপর ফ্যাসিবাদী সরকারের দমন-পীড়নের কথা যুগে যুগে জাতি ভুলে যায়নি। ষাট লাখের বেশি শ্রমিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, বিশ হাজারের বেশি নেতাকর্মীর হত্যাকাণ্ড ও গুমের শিকার হওয়া হলো এর নজির। জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, নয়া দিগন্তের মালিক মীর কাসেম আলী, সালাউদ্দিন কাদেরসহ অনেকে আলেম-ওলামাকে মিথ্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এসব মানবতার ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায়।
তিনি বলেন, দেশের আমজনতা স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চায়— এমন এক বাংলাদেশ, যেখানে বিদেশি শক্তির দখলে নয়, জনগণের ইচ্ছা অনুসারে চলে। নয়া দিগন্ত এই লক্ষ্য ও লক্ষ্যক্রমে গণমানুষের স্বর হয়ে কাজ করে চলেছে।
১৯৭৫ সালের বাকশাল শাসনের সময় সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণের দুঃস্বপ্নের স্মৃতি উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ওই সময় সাংবাদিকরা বেকার হয়ে পড়েছিলেন, কেউ কেউ রাস্তায় হকারি করতে বাধ্য হয়েছিলেন। পরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এই স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনেন এবং বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনর্বসিত করেন।
তিনি বলেন, নয়া দিগন্ত সবসময় সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে অর্ধশতকও বেশি সময়ে এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। দলের পক্ষ থেকে সম্পাদক, প্রকাশক, রিপোর্টার ও সকল কর্মীদের জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে তিনি বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে সকল নয়া দিগন্ত পরিবারের সদস্যদের শুভেচ্ছা জানান।
Leave a Reply