ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের खेलে বাংলাদেশি স্পিনার রিশাদ হোসেনের অসাধারণ পারফরম্যান্স করেছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। ব্রেন্ডন কিং ও অ্যালিক আথানাজের শক্তিশালী ব্যাটিং জুটির মাধ্যমে সহজেই জয়ের পথে এগুচ্ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ, পরিবেশ কঠিন হয়ে পড়েছিল। তবে ইনিংসের ১১তম ওভারে প্রথমবার বোলিংয়ে এসে তিনি বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে দেন। তার বিখ্যাত এই এক ওভারে তিনি প্রথম ডেলিভারিতে ব্রেন্ডন কিংকে আউট করেন, পরে অ্যালিক আথানাজসহ চার ব্যাটারকেও ফেরান। এই ম্যাচে তিনি ১০ ওভারে মাত্র ৩৫ রান দিয়ে ৬ উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ারসেরা পারফরম্যান্স করেন, যা বাংলাদেশি স্বাভাবিক স্পিনারদের মধ্যে প্রথমবারের মতো ওয়ানডেতে ৬ উইকেট উঠানোর অনন্য কীর্তি।
দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার পর দেশের প্রথম স্পিনার হিসেবে এই স্পেশাল রেকর্ডটি গড়লেন তিনি। তার এই অসাধারণ সংগ্রহের ফলে পরবর্তীতে আরো দুটি ম্যাচে তিনটি উইকেট নিয়ে তার পারফরম্যান্স ধরে রাখেন। এই দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের জন্য আইসিসির রেকর্ডিংয়ে তিনি ৬৫ ধাপ এগিয়ে গিয়ে ৪৩০ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশি স্পিনারদের মধ্যে ৬৬ নম্বরে অবস্থান নিয়েছেন। তার সঙ্গে আছেন জুনায়েদ সিদ্দিকী ও কালিম সানা।
সব মিলিয়ে, বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিংয়ে নিজেকে প্রমাণ করেছেন রিশাদ। প্রথম ম্যাচে ১৩ বলে ২৬ রান করে দলের জয়ের মূল কারিগর হয়ে উঠেছিলেন, দ্বিতীয় ম্যাচে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ১৪ বলে ৩৯ রান করে অপরাজিত থাকেন—এভাবেই অলরাউন্ডার হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেন তিনি। এর ফলস্বরূপ, ওয়ানডে অলরাউন্ডারদের র্যাঙ্কিংয়ে তিনি ৮৭ ধাপ এগিয়ে ৩৭ নম্বর স্থান egna।
অপর দিকে, বাংলাদেশের অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজও তার পারফরম্যান্সে উন্নতি করেছেন। দুই ম্যাচে তিনি এক উইকেট নিয়েছেন, পাশাপাশি ৪৯ রান করে ১ ধাপ এগিয়ে ৫৭৮ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে ১৮ নম্বরে অবস্থান করছেন, যা দলের সেরা। তার র্যাঙ্কিংয়ে আরও উন্নতি হয়েছে, যখন তিনি অস্ট্রেলিয়ান রশিদ খানকে পেছনে ফেলেছেন।
অলরাউন্ডারদের মধ্যে শীর্ষে আছেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই, দ্বিতীয় স্থানে সিকান্দার রাজা, আর তিন নম্বর বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে মেহেদী হাসান মিরাজ।
বল হাতে, দুই ম্যাচে মাত্র একটি উইকেট পাওয়ার পরও প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের আটকে রাখা ও মিতব্যয়ী বোলিংয়ে তিনি দলের মূল স্তম্ভ। প্রথম ওয়ানডেতে ১০ ওভারে ১৬ রানে এক উইকেট নেওয়া মিরাজ, দ্বিতীয় ম্যাচে ৩৮ রান দিয়ে ২ উইকেট হাসিল করেন। তার এই ধারাবাহিকতা তাকে আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ে ৬ ধাপ এগিয়ে ১৮ নম্বরে নিয়ে এসেছে। বাংলাদেশের পেসারদের মধ্যে তার স্থান শীর্ষে। তবে, তাসকিন আহমেদ দ্বিতীয় ম্যাচে বিশ্রামে থাকায় ৪ ধাপ পিছিয়ে ৩৮ নম্বর হয়েছেন। মুস্তাফিজুর রহমান আগের মতোই ৫৬ নম্বরে থাকছেন।
অন্যদিকে, নতুন মুখ নাসুম আহমেদ (৭১ নম্বর), তানজিম হাসান সাকিব ও শরিফুল ইসলাম ধাপে ধাপে উন্নতি করছেন। নাসুম মাত্র এক ম্যাচ খেলে ১৬ ধাপ এগিয়ে গেছেন, ১০ ওভারে ৩৮ রান ও ২ উইকেট নিয়ে।
ব্যাটিংয়ে, মিরাজ, তাওহীদ হৃদয় ও সৌম্য সরকারের পারফরম্যান্সে উন্নতি লক্ষ্য করা গেছে। প্রথম ম্যাচে ৫১ রান করা হৃদয়, দ্বিতীয় ম্যাচে ১২ রান করে ৭ ধাপ উপরে উঠে ৩৫তম স্থান অর্জন করেন। সৌম্যর পারফরম্যান্সও commendable—৪৫ রানে অপরাজিত থাকায় তিনি ৫ ধাপ এগিয়ে ৮৬ নম্বরে পৌঁছেছেন। লিটন দাস ও জাকের আলী অনিকের পারফরম্যান্স কিছুটা পিছিয়ে গেলেও, হঠাৎ করে উন্নতি করেছেন প্রগাত সিং ও সেদিকউল্লাহ অটল। চট্টগ্রাম সিরিজে সুযোগ না পাওয়ায় লিটন দাসের স্থান দুই ধাপ পেছিয়েছে। এছাড়া, চোট কাটিয়ে ফিরছেন তানভীর ইসলাম। তিনি ২ ধাপ এগিয়ে ৫৬ নম্বর হয়েছেন।
Leave a Reply