সর্বশেষঃ
সাবেক ১২ মন্ত্রীসহ ১৪ জনকে আজ হাজির করা হচ্ছে ট্রাইব্যুনালে দীপু মনির সুপারিশে মাউশিতে তিন হাজার পদায়ন জয়া আহসান: পরিচালকের বান্ধবী বা স্ত্রীর মতো সম্পর্ক সম্ভব নয় উপস্থাপক সমৃদ্ধিকে ‘আয়না’ পডকাস্ট থেকে অব্যাহতি বালিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা গোবর্ধন আসরানি ইন্তেকাল করেছেন ৩৫ বছর বয়সে চলেছেন জনপ্রিয় ভারতীয় সংগীতশিল্পী ঋষভ ট্যান্ডন নগর বাউল জেমস ফের বিয়ে করলেন খুলনা ফাইটার কারাতে ক্লাবের অসাধারণ সাফল্য মুক্তিপণ না দিতে পেরে প্রাণ গেল গোলরক্ষকের ভারতীয় দল ট্রফি গ্রহণে নাকভির শর্তে বিতর্ক রিশাদের ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ে ৬৫ ধাপ উন্নতি সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ, দেখে নিন একাদশ
কার্গো টার্মিনালে আগুনে রপ্তানি ক্ষতি ১২ হাজার কোটি টাকা: ইএবি

কার্গো টার্মিনালে আগুনে রপ্তানি ক্ষতি ১২ হাজার কোটি টাকা: ইএবি

দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো টার্মিনালে ভয়াবহ একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দেশের রপ্তানি খাত ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, এই ঘটনায় প্রায় এক বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ বারো হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) রপ্তানি ও শিল্পখাত সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম, অর্থাৎ ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইএবি), এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য প্রকাশ করে। সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।

সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, এই অগ্নিকাণ্ডের ফলে শুধু ব্যবসায়ী বা রপ্তানিকারকরা নয়, পুরো দেশের অর্থনীতি বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গেছে। আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের আস্থা কমে গেছে, ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার হারানোর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমরা চাই, এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতির সঠিক হিসাব নিরূপণ করা হোক এবং দ্রুত পুনর্গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হোক। তিনি বলেন, শাহজালাল বিমানবন্দর দেশের রপ্তানি বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্রে, যেখানে প্রতিদিন কোটি কোটি ডলারের পণ্য পৌঁছায় বা যায়। এই ধরনের ঘটনা এবার আর যেন না ঘটে, সে জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন জরুরি।

সংবাদ সম্মেলনে ইএবি নেতারা উল্লেখ করেন, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো হ্যান্ডলিং অঞ্চল দেশের রপ্তানি বাণিজ্যের হৃদয়। সেখানে প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের পণ্য—কোটি কোটি ডলারের পোশাক, চামড়া, হিমায়িত মাছ, কৃষিপণ্য, ফলমূল, ফার্মাসিউটিক্যাল কাঁচামাল—অুপযুক্তভাবে পরিচালিত হয়। এমন একটি সংবেদনশীল স্থানে অগ্নিকাণ্ড একটি দুর্ঘটনা নয় বরং নিরাপত্তা ব্যবস্থার গুরুতর দুর্বলতার প্রতিফলন।

তারা প্রশ্ন করেন, এই গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় কি কোন স্বয়ংক্রিয় ফায়ার ডিটেকশন বা প্রোটেকশন সিস্টেম ছিল? আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে বিমানবন্দরের নিজস্ব ফায়ার ফাইটিং টিম কোথায় ছিল? বাইরে থেকে ফায়ার সার্ভিস আসতে এত সময় লাগলো কেন? নেতারা অভিযোগ করেন, সিভিল এভিয়েশন, কাস্টমস হাউস, এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স—এই তিন সংস্থাই কার্গো টার্মিনালের নিরাপত্তার জন্য দায়ী, অথচ তারা কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, আগুনে বিভিন্ন ধরনের রপ্তানি পণ্য পুড়ে গেছে, যার মধ্যে রয়েছে তৈরি পোশাক, চামড়া, হিমায়িত মাছ, কৃষিপণ্য, ফলমূল, ও ফার্মাসিউটিক্যাল কাঁচামাল। এতে অনেক ক্রেতা তাদের অর্ডার বাতিল করেছেন, আবার বিদেশি ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে ইএবি ও সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো সরকারের কাছে ছয় দফা দাবি উপস্থাপন করে। সেসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য— ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য দ্রুত বিমা ক্ষতিপূরণ, যেসব পণ্য বীমা কাভারের আওতায় ছিল না, সেগুলোর জন্য বিশেষ সরকারি তহবিল থেকে সহায়তা, বিমানবন্দরের কার্গো হ্যান্ডলিং সেবা আধুনিকীকরণ ও নিরাপত্তা জোরদার, রপ্তানি পণ্যের নিরাপত্তা ঝুঁকি মূল্যায়ন, আধুনিক স্ক্যানার ও মনিটরিং প্রযুক্তি স্থাপন, কার্গো ব্যবস্থাপনা ডিজিটালাইজেশন এবং ফায়ার প্রোটেকশনের উন্নয়ন।

উল্লেখ্য, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান ও প্রতিকার জন্য সরকারের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কমিটি গঠন করা প্রয়োজন বলে দাবি করেছে সংগঠনের নেতারা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY Shipon tech bd