বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) তার সর্বশেষ ৯৭৮তম কমিশন সভায় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিলো, যেখানে সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এবং এলআর গ্লোবাল এ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রিয়াজ ইসলামকে পুঁজিবাজারে আজীবন নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দেয়া হয়। এই সিদ্ধান্তের পেছনে মূল কারণ হলো তাদের অনৈতিক কর্মকাণ্ড ও সংশ্লিষ্ট দুর্নীতি। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ।
বিজ্ঞানী ও অ্যাকাউন্টিং বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিদ্ধান্ত তারেক বাংলাদেশ অর্থনীতি ও বিনিয়োগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি সতর্কবার্তা, যা নিশ্চিত করে যে পুঁজিবাজারে কেউই অবৈধ ও অনৈতিক কাজের মাধ্যমে নিজের স্বার্থ আদায় করতে পারবেন না।
বিএসইসির এক বিজ্ঞপ্তি জানিয়েছে, করোনার সময় পদ্মা প্রিন্টার্স এ্যান্ড কালার লিমিটেডের বিনিয়োগ ও কোয়েস্ট বিডিসি লিমিটেডের মূলধন ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা থেকে ৫০ কোটি টাকায় উন্নীত করার প্রক্রিয়ায় অনৈতিক যোগাযোগ ও জালিয়াতির প্রমাণ পেয়ে তাদের এই কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়। এর আগে, গত সেপ্টেম্বর মাসে পুঁজিবাজারের ওটিসি মার্কেটে তালিকাভুক্ত কোয়েস্ট বিডিসির কার্যক্রমে অনিয়ম, দুর্নীতি ও আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে। ওই অনুসন্ধানে দেখা যায়, পরিচালক ও কর্মকর্তারা শেয়ার উচ্চ দামে ক্রয় করেছেন, বিনিয়োগের নামে অবৈধ লেনদেন করেছেন, সম্পদের ভ্যালুয়েশন চালিয়েছেন এবং অনুমোদনবিহীন ব্যবসা পরিচালনা করেছেন।
তদন্তের প্রক্রিয়ায় উঠে এসেছে, ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত এক ঘটনাবহুল সময়ে, তখনকার নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যানের সহায়তায় রিয়াজ ইসলাম এলআর গ্লোবালের মাধ্যমে পদ্মা প্রিন্টার্সের ৫১ শতাংশ শেয়ার কেনা হয়। এর মধ্যে উচ্চ দামে শেয়ার কেনাকাটা, ছয়টি মিউচুয়াল ফান্ডের সহযোগিতায় পরিচালক পদে কর্মকর্তাদের বসানো, টাকাপয়সার অবৈধ ব্যবহার এবং সম্পদ মূল্যায়নে অনিয়মের মাধ্যমে শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে অসাধু ব্যবসা চালানো ছিল মূল কূটকৌশল।
অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ার বিক্রির জন্য প্ররোচিত করেছেন এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ সুবিধা গ্রহণ করেছেন। একই সময়ে, এলআর গ্লোবালের ব্যবস্থাপনায় থাকা মিউচুয়াল ফান্ডগুলোকে মূলধনের ক্ষতি হেতু তালিকাবহির্ভূত কোম্পানি ও সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের মাধ্যমে অপব্যবহার করা হয়েছে। এজন্য তাদের কার্যক্রম থেকে আজীবন নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি দপ্তরের তদন্ত ও মানি লন্ডারিংয়ের বিষয়ে বিস্তারিত তদন্তের জন্য দুদককে সংক্রান্ত করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষিত করতে এবং পুঁজিবাজারের সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ পরিবেশ নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
Leave a Reply