বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সাইবার নিরাপত্তার জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য হিসেবে দেখা হয়েছে 최근 বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিট) বিশাল সংখ্যক মোবাইল ব্যাংকিং (এমএফএস) অ্যাকাউন্ট স্থগিত করেছে। এই কারণে ৫০ হাজারের বেশি অ্যাকাউন্ট জুয়া ও প্রতারণামূলক কার্যক্রমে জড়িত থাকায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছিল ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে শুরু করে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত। তবে সম্প্রতি এই বিষয়ে বেশি নজর দিতে সমন্বিত অভিযান চালানো হয়েছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক জমকালো সভায় বিএফআইইউর একজন প্রতিনিধি এই তথ্য নিশ্চিত করেন। এতে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), মোবাইল অপারেটর কোম্পানি ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সেখানে বক্তারা জানিয়েছেন, সরকারের মাধ্যমে বার্তা পাঠানো হচ্ছে যাতে এমএফএস অ্যাকাউন্টগুলো থেকে জুয়া ও প্রতারণামূলক লেনদেন প্রতিহত করা যায়। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে আরো কঠোর নির্দেশনা প্রদান করা হবে। স্থগিত অ্যাকাউন্টগুলো থেকে কোথায় কোথায় অনিয়ম হয়ছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে রিপোর্ট দেওয়া হচ্ছে।
আরও জানা গেছে, অনলাইন জুয়া ও অ্যাটাকের মাধ্যমে অর্থ লেনদেনের জন্য বেনামি সিমের ব্যাপারও বাড়ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে, মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করছে এবং বিকাশের নকল এপ্প তৈরি করছে। এর ফলে নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য ডার্ক ওয়েবে বিক্রি হচ্ছে, যা বিভিন্ন অপরাধের জন্ম দিচ্ছে।
অতীতে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়া বিজ্ঞাপন বন্ধের জন্য সময় দিচ্ছিল। তবে বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল এখনো অবৈধ ও অনিরাপদ কনটেন্ট প্রচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠে। এসব পোর্টালে জুয়া বিজ্ঞাপন এবং অননুমোদিত কনটেন্ট প্রচারে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা যেকোনো মুহূর্তে এই ধরনের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়ার সক্ষমতা রাখে। তাদের সতর্ক করে বলা হয়েছে, আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে যদি অবৈধ কার্যকলাপ বন্ধ না হয়।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, সরকারের একজন বিশেষ উপদেষ্টার, বলেছে যে, বর্তমানে সরকারের কাছে মোট ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর এবং ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিঙ্ক ধরা পড়েছে। কিন্তু চক্রের সদস্যরা প্রতিবারই নতুন করে আইপি ঠিকানা, ওয়েবসাইটের নাম বদলে আবারও চালু করছে। নতুন অ্যাপ তৈরি করে এবং পুরোনো অ্যাপের অপ্রস্তুতিও থাকায় কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে তারা জানিয়েছেন, এই লেনদেন বন্ধের জন্য উচ্চতর পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply