জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ আজও সিনেমাপ্রেমীদের হৃদয়ে অমর হয়ে আছেন। তার অবর্তমানে ঢালিউডে তার অভাব অনেকটাই অনুভূত হয়। এই অকালপ্রয়াত তারকার মৃত্যুর রহস্য উন্মোচনে জোরালো জল্পনা থাকলেও, সম্প্রতি তার মৃত্যু নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। আদালত সালমান শাহ হত্যা মামলার পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন, যা সবাইকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে।
আজ, সোমবার (২০ অক্টোবর), রাজধানীর মহানগর দায়রা জজ আদালত সালমানের মা নীলা চৌধুরীর রিভিশন আবেদন মঞ্জুর করে জানিয়েছেন যে, এই মামলা আবার চালু থাকবে এবং তদন্তের স্বার্থে নতুন করে আলামতসমূহ পরীক্ষা করা হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, সালমান শাহর মৃত্যুর সময় তার বুকের বাম পাশে কালো দাগ ছিল। এমনকি, তার দেহে মল ও বীর্যও দেখা গিয়েছিল। তার ঘরে সিরিঞ্জ এবং স্ত্রীর ব্যাগে ক্লোরোফরম ওষুধ থাকায় অনেকের মনে প্রশ্ন উঠেছে, কি জন্য এইসব উপকরণ ছিল তাৎক্ষণিকভাবে তদন্তের বিষয়। তখনকার পোস্টমর্টেম রিপোর্টে বলা হয়েছিল, আত্মহত্যা, তবে সিবিআইয়ের তদন্তে বিভিন্ন গড়মিলের কারণে উঠেছিল সন্দেহের গলাঘাটা।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সালমান শাহ আর আমরা দেখিনি, কিন্তু তার মৃত্যু নিয়ে নানা আলোচনাও শুরু হয়। তখন অনেকের মতে, তিনি আত্মহত্যা করেছিলেন, অন্যদিকে তার পরিবার দাবি করেছিল, এটি আসলে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
সালমান শাহর প্রাক্তন স্ত্রী সামিরা হক ব্যাখ্যা করেছিলেন, তার স্বামী মানসিকভাবে সুইসাইডাল ছিলেন। তিনি বলেন, ‘ও (ইমন) তিনবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে, সে সম্পর্কে মেট্রোপলিটন হাসপাতালের রেকর্ডে বিস্তারিত রয়েছে। এগুলো তার বিয়ের আগে হয়েছে এবং তার মধ্যে অনেকটাই মানসিক চাপ ও পারিবারিক কলহের ফল।’
৯০ দশকের শুরুতে একের পর এক ব্যবসাসফল সিনেমা দিয়ে জনপ্রিয়তা অর্জনের পাশাপাশি, তিনি প্রায় চার বছরের মধ্যে ২৭টি সিনেমায় অভিনয় করেন। তার উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলির মধ্যে রয়েছে ‘ constitution থেকে কেয়ামত’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘প্রেমযুদ্ধ’, ‘এই ঘর এই সংসার’, ‘জীবন সংসার’, ও ‘অশ্রু দিয়ে লেখা’।
সালমান শাহ এবং শাবনূর জুটি সিনেমাপ্রেমীদের কাছে ছিল অতি জনপ্রিয়, কিন্তু তার পাশাপাশি তিনি মৌসুমী, শাবনাজ, রোজিনা প্রমুখ কালেকশনের সাথে স্ক্রিন শেয়ার করেছিলেন। এই সব দিকনির্দেশনা ও তার স্বপ্নে ভরপুর জীবনই তাকে আজও বাংলার দর্শকের হৃদয়ে অমর করে রেখেছে।
Leave a Reply