বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট করে বলেছেন, নিজেকে কখনই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাস্টারমাইন্ড হিসেবে দেখেন না। তিনি জানান, এই গণঅভ্যুত্থানের মূল শক্তি এবং কৌশলগত নেতৃত্ব জনগণের মধ্যেই ছিল। তারেক রহমান বিবিসি বাংলাকে একাধিক পর্বের সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন, যার প্রথম অংশ সোমবার (৬ অক্টোবর) তাদের ফেসবুক পেজে প্রকাশিত হয়।
২০২৪ সালের জুলাই মাসে কোটা সংস্কার আন্দোলনের আড়ালে শুরু হওয়া ছাত্র আন্দোলন ধীরে ধীরে বৃহৎ গণ-আন্দোলনে রূপ নেয়। এই ব্যাপক বিক্ষোভে তীব্র সংঘর্ষের মাঝখানে, ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান। এর পরে বিভিন্ন মহলে আলোচনা শুরু হয়, কে বা কারা ছিল এই আন্দোলনের মূল চালিকা শক্তি বা মাস্টারমাইন্ড।
বিশেষ করে নিউইয়র্কে বিশ্বনেতা মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতিতে ছাত্রদের পরিচিতি হওয়ার পর বিষয়টি আরও জোরেশোরে আলোচনায় আসে। এরপর বিএনপি, জামায়াত, ইসলামপন্থী বিভিন্ন দলসহ ছোট ছোট দলে নেতাদের মাধ্যমে নানা সমাবেশে আন্দোলনের কৃতিত্বের দাবির চলতে থাকে।
তারেক রহমান বলেন, ‘আমি কখনোই নিজেকে এই আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড হিসেবে ভাবি না। এই আন্দোলনটি শুরু হয় ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট, যা সবাই জুড়ে দিয়েছে জুলাই মাসের নামে। কিন্তু এর প্র্রারম্ভকাল বহু আগে থেকেই। এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, তাদের নেতাকর্মীরা, যারা গণতান্ত্রিক মূলধারার। তারা প্রত্যেকে ভিন্ন ভিন্নভাবে অবদান রেখেছেন।’
তিনি বলেন, ‘কেবল রাজনৈতিক নেতাকর্মীরাই নয়, সেদিন বিভিন্ন পেশার মানুষও রাস্তায় ছিলেন। মাদরাসার ছাত্র, গৃহিণারা সন্তানের পেছনে রাস্তায় নেমেছিলেন। কৃষক, শ্রমিক, সিএনজি চালক, ছোট দোকানি থেকে শুরু করে গার্মেন্টস কর্মী-সবাই আন্দোলনে শরিক ছিলেন। এমনকি অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং স্বৈরাচারের অত্যাচারে দেশত্যাগ করা সাংবাদিকরা সেখানে উপস্থিতি দেখিয়েছেন। এই প্রত্যেকের অবদানকে আমরা ছোট করে দেখিনা। সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ সবাই এই আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন।’
তারেক রহমান আরও বলেন, ‘এই আন্দোলন ছিল বাংলাদেশের সাধারণ জনগণের আন্দোলন, যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। এটাই ছিল মূল আন্দোলনের শক্তি এবং মাস্টারমাইন্ড, কারণ কেউ কোনো দল বা ব্যক্তি নয়—এই আন্দোলনের একমাত্র মূল চালিকা শক্তি হলো দেশের গণতন্ত্রকামী জনতা।’
আন্দোলনের শুরুতেই ছাত্রদের মধ্যে যোগাযোগের বিষয়টি নিয়ে এক প্রশ্নে তিনি নেড বলে, ‘আমরা যখন বাইরে থেকে কাজ করছিলাম, তখন আমাদের জন্য যোগাযোগের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সে সময় স্বৈরাচারিরা টেলিফোন বা অনলাইন যোগাযোগে নানা বাধা সৃষ্টি করেছিল। আমাদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে, কার্যত ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতিতে যোগাযোগ চালাতে হয়েছে। সবসময় এই যোগাযোগ সম্পূর্ণ স্বচ্ছ বা স্মুথ ছিল না, তবে প্রত্যেকের সহযোগিতায় আন্দোলন চালাতে পেরেছি।’
Leave a Reply