সর্বশেষঃ
সাবেক ১২ মন্ত্রীসহ ১৪ জনকে আজ হাজির করা হচ্ছে ট্রাইব্যুনালে দীপু মনির সুপারিশে মাউশিতে তিন হাজার পদায়ন রাতের অন্ধকারে মুক্তিযোদ্ধা ও স্ত্রীর হত্যা: শোবার ঘরে পড়ে ছিল মরদেহ শেখ হাসিনার গুমে সরাসরি নির্দেশ ছিল: ট্রাইব্যুনালে চিফ প্রসিকিউটর নৌবাহিনী নির্বাচনী দায়িত্ব গ্রহণে অঙ্গীকারবদ্ধ কওমি ডিগ্রিধারীরাও কাজী হতে পারবেন সালমান শাহ হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পেছালো হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে জনপ্রিয় টিকটকার ববি গ্রেভসের মৃত্যু ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর পর প্রথমবার মুখ খুললেন হেমা মালিনী নায়িকা পপি বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠালো পরিবার প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী জেনস সুমন আর নেই শাকিবের ‘পাইলট’ লুক সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলছে
গভর্নরের পরামর্শ: সঞ্চয়পত্র ও বন্ডের জন্য আলাদা বাজার তৈরি করুন

গভর্নরের পরামর্শ: সঞ্চয়পত্র ও বন্ডের জন্য আলাদা বাজার তৈরি করুন

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বাজারকে আরও শক্তিশালী ও যুগোপযোগী করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব করেছেন। তিনি বলেন, দেশের সঞ্চয়পত্র ও বেসরকারি বন্ডের জন্য পৃথক সেকেন্ডারি মার্কেট বা পরবর্তী বাজার তৈরি করা জরুরি, যা দ্রুত সম্ভব যদি রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকুক। এই উদ্যোগ দেশের অর্থনৈতিক কাঠামোকে সুদৃঢ় করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর, রাজধানীর উত্তরায় অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে গভর্নর এসব কথা বলেন, যেখানে বন্ড ও সুকুক মার্কেটের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়। তিনি বলেন, বর্তমানে সঞ্চয়পত্রের কিছু লেনদেন বাজারে হয়, কিন্তু তা সম্পূর্ণভাবে ট্রেডযোগ্য করা উচিত। এতে সাধারণ গ্রাহকরা উপকৃত হবেন এবং বাজারে তারল্য বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি, তিনি বেসরকারি বন্ডের জন্যও লেনদেনযোগ্যতার প্রস্তাব দেন। তাঁর মতে, সঠিক কাঠামো প্রতিষ্ঠিত হলে বন্ড মার্কেটের আকার দ্বিগুণ হতে পারে, যা দেশের আর্থিক খাতের জন্য ইতিবাচক দিক হবে।

আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, দীর্ঘমেয়াদি তহবিলের উৎস হিসেবে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন শ্রমশক্তি, পেনশন ব্যবস্থা, করপোরেট পেনশন ফান্ড, প্রভিডেন্ট ফান্ড ও বেনেভোলেন্ট ফান্ডকে গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি জোর দিয়েছেন, এই ধরনের বিনিয়োগের জন্য একটি কার্যকর পেনশন নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন, যা তহবিলের ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে পরিচালনা করবে।

গভর্নর আরও বললেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কাঠামো তুলনা করলে দেখা যায়, আন্তর্জাতিক অর্থনীতি মূলত বন্ড-নির্ভর, যেখানে প্রায় ১৩০ ট্রিলিয়ন ডলার বন্ড ইস্যু হয়েছে, যা দেশের মোট জিডিপির ১৩০ শতাংশ। বিপরীতে, বাংলাদেশ প্রধানত ব্যাংকনির্ভর অর্থনৈতিক কাঠামো পরিচালনা করছে, যেখানে স্টক মার্কেটের পরিমাণ ৯০ ট্রিলিয়ন ডলার ও মানি মার্কেটের আকার মাত্র ৬০ ট্রিলিয়ন ডলার। দেশের বিমা খাতের আকারও খুবই ছোট—জিডিপির মাত্র ০.৪ শতাংশ।

গভর্নর বলেন, বাংলাদেশের বাজারে বন্ডের চাহিদা ও সরবরাহ উভয়কেই বাড়ানো দরকার। বর্তমানে সরকারি বন্ডের আধিপত্য থাকলেও করপোরেট বন্ডের বাজার খুবই ছোট। তিনি কারো কারো জন্য ব্যাংক ঋণের ওপর নির্ভরশীলতা ও রাজনৈতিক প্রভাবের দিকে ইঙ্গিত করেন, যা করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গভর্নর বলেন, সুকুক বা ইসলামী বন্ডের বাজারও এখনও খুবই ক্ষুদ্র, যেখানে মোট ছয়টি সুকুক ইস্যু হয়েছে, যার মূল্য প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা। তিনি দ্রুত এই বাজার বাড়ানোর জন্য একটি নতুন কৌশল প্রস্তাব করেন। সেটি হলো, যমুনা বা পদ্মা সেতুর মতো বড় প্রকল্পের টোল আয় বা মেট্রোরেল প্রকল্পের উপার্জিত অর্থকে ‘সিকিউরিটাইজ’ করে বিভিন্ন নতুন প্রকল্পে বিনিয়োগের জন্য ব্যবহার করা। এর জন্য অর্থ মন্ত্রালয়ে একটি বিশেষ, কার্যকরী বিভাগ গঠন করার পরামর্শ দেন তিনি।

সেমিনান শেষে গভর্নর জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যে বন্ড মার্কেটের উন্নয়নের জন্য একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে। খুব শিগগিরই এই প্রতিবেদনে সুপারিশসমূহ সহ বিভিন্ন ধরনের বন্ডের উন্নয়নের দিকনির্দেশনা সরকারের কাছে উপস্থাপন করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY Shipon tech bd