অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, তিনি একটি সমতা নির্ভর এবং মানবিক রাষ্ট্র গড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য হলো একটি রাষ্ট্র নির্মাণ করা, যেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর চৌকস পাহারার মধ্যে নয়, বরং সবাই স্বাধীনভাবে নিজের ধর্ম পালন করতে পারবে। তিনি নিশ্চিত করেছেন, কোনো নাগরিকের ধর্ম, পরিচয় বা বিশ্বাসের ভিত্তিতে বৈষম্য থাকবে না।
৬ই সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সকালবেলা ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পরিদর্শনে এসে তিনি এসব কথা বলেন। পরিদর্শনের সময় তিনি পূজা আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সভা-সভার আয়োজন করেন। ড. ইউনূস বলেন, ‘আমরা যদি নিজেদের মধ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ি, তবে জাতি হিসেবে আমরা ব্যর্থ হবো। কিন্তু আমরা তা চাই না। আমাদের লক্ষ্য হলো এমন একটি বাংলাদেশ তৈরি করা, যেখানে প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার সমান হবে। এখানে কেউ সংখ্যাগরিষ্ঠ বা সংখ্যালঘু বলে বিবেচিত হবে না, সবাই মর্যাদার সঙ্গে জীবনযাপন করবে।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, রাষ্ট্রের অন্যতম দায়িত্ব হলো—সকল ধর্ম, সকল বিশ্বাসকে সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখা। ধর্মের পার্থক্য থাকতে পারে, তবে রাষ্ট্রের কাছে সব নাগরিকের মর্যাদা সমান।
বিশ্ব সম্প্রদায়ের জন্য মানবিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র গড়ার আহ্বান জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমরা যদি সত্যিকার অর্থে একটি শান্তিপূর্ণ ও মানবিক বাংলাদেশ চাই, তাহলে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’ গত ১৫ সেপ্টেম্বর, সোমবার তিনি রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিভিন্ন পূজা উদযাপন কমিটির নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারা তাঁকে আসন্ন দুর্গোত্সবের জন্য পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানালে, তিনি সেটি গ্রহণ করে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে যান।
সাক্ষাত্কালে ড. ইউনূস বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছে সবসময়ই থাকে, কিন্তু সবসময় সেটা হয়ে ওঠে না। পূজার সময়টায় অন্তত বছরব্যাপী একবার দেখা হয়, এই মুহূর্তটা আমার জন্য বড়ই প্রাপ্তি।’
তিনি পূজা প্রস্তুতি সম্পর্কে খোঁজ নেওয়ার পাশাপাশি বলেন, ‘সরকার সব ধর্মীয় উৎসব সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্নে পালনে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে।’ এদিকে, হিন্দু ধর্মীয় নেতারা জানিয়েছেন যে, গত বছরের তুলনায় এবার আরও আশি হাজারের বেশি নতুন পূজামণ্ডপ নির্মিত হচ্ছে, যা পূজার প্রস্তুতিকে আরও জোরদার করেছে।
Leave a Reply