ভারত সফরের প্রথম পর্যায়ে কলকাতায় ঘটে যাওয়া বিশৃঙ্খলার পর এবার হায়দরাবাদে দেখা গেল এক অন্যরকম চিত্র। এ শহরে মেসির উপস্থিতিতে পুরো পরিবেশটি ছিল শান্তিপূর্ণ ও মুগ্ধকর। রাজীব গান্ধি আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের দারুণ আয়োজন সবাইকে আকৃষ্ট করে, যেখানে দর্শকদের মধ্যে ছিল বিপুল উৎসাহ। আর্জেন্টাইন তারকা লিওনেল মেসি দর্শকদের চমকপ্রদ শৈল্পিক ফুটবল প্রদর্শন করেন, তার বাঁ পায়ের নিখুঁত শটে বল গ্যালারিতে পাঠিয়ে সবাইকে আনন্দে ভাসিয়ে দেন। তিনি দর্শকদের স্বাগত জানিয়ে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা বার্তা দেন। মূলত ‘গোট ইন্ডিয়া ট্যুর’ এর অংশ হিসেবে স্টেডিয়ামে পৌঁছান মেসি, যেখানে তার সঙ্গে ছিলেন ইন্টার মায়ামির সতীর্থ রদ্রিগো ডি পল ও লুইস সুয়ারেস। সেখানে একটি প্রদর্শনী ম্যাচ চলছিল, যেখানে তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেভান্ত রেড্ডিও কিছুক্ষণ খেলেন। এই সময় মেসি, সুয়ারেস ও ডি পল ভিওআইপি থেকে খেলা দেখেন, মাঠে নেমে দুই দলের খেলোয়াড়দের সাথে করমর্দন করেন, অটোগ্রাফ দেন এবং সবাইকে ছবি তোলার সুযোগ দেন। তিনি খেলোয়াড়দের সাথে বলও আদান-প্রদান করেন। ম্যাচ শেষে জয়ী দলের হাতে ট্রফি তুলে দেন মেসি এবং সংক্ষিপ্ত ভাষণে সবাইকে ধন্যবাদ জানান। বলেন, হায়দরাবাদে থাকতে পেরে তিনি খুবই আনন্দিত। ডি পলও এই সন্ধ্যাকে খুবই বিশেষ বলে অভিহিত করেন, এবং ভবিষ্যতে আবারও বিশ্বকাপ জিততে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানের শেষে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী আসরে যোগ দেন, এবং মেসি তেলেঙ্গানা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী রেভান্ত রেড্ডি ও রাহুল গান্ধিকে আর্জেন্টিনার জাতীয় দলের দশ নম্বর জার্সি উপহার দেন। এরপর স্টেডিয়াম থেকে বিদায় নেন এই ফুটবল কিংবদন্তি।
এর আগে কলকাতার সল্ট লেক স্টেডিয়ামে মেসির উপস্থিতি ঘিরে কিছু বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। ভারতীয় গণমাধ্যমের দাবি, মাত্র ২০ মিনিট তিনি স্টেডিয়ামে ছিলেন, কিন্তু দর্শকদের এক বড় অংশ তাকে দেখতে পাননি। জনসাধারণের মধ্যে হতাশা ও উত্তেজনা তৈরি হলে কিছু ক্ষণের মধ্যে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। বিষয়টি আন্তর্জাতিক মিডিয়ায়ও খবর হলো। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই পরিস্থিতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তদন্তের নির্দেশ দেন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশের মাধ্যমে উদ্যোক্তা শতদ্রু দত্তকেও আটক করা হয়।
কলকাতা ও হায়দরাবাদের পর মেসির ভারতীয় সফর শেষ হওয়ার পথে রয়েছে— যেখানে শেষ হবে তার এই বিশেষ পর্ব, মুম্বাই এবং দিল্লিতে দর্শকদের সঙ্গেই তার যাত্রা অব্যাহত থাকবে।
Leave a Reply