বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ‘আসন্ন নির্বাচনটা সহজ হবে না, কারণ ষড়যন্ত্র এখনো থেমে নেই। গত কয়েক দিন ধরে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো— হাদিকে গুলির ঘটনা, চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনা— এগুলো প্রমাণ করে যে আমি যা আগের বার বলেছিলাম তা ধীরে ধীরে সত্যি হচ্ছে।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিএনপির আয়োজিত ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক একটি কর্মশালায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর ফার্মগেটে অবস্থিত কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালার সপ্তম দিনের সিরিজের অংশ হিসেবে দলের মাঠ পর্যায়ের নেতারা এই আলোচনা শোনেন।
তারেক রহমান উল্লেখ করেন, ‘যদি আমরা নিজেদের মধ্যে মতপার্থক্য কমিয়ে না আনি, যদি আমরা একে অপরের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ না হই, তাহলে এই দেশ ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাবে। মুক্তিযুদ্ধের সময়বার্তা থেকে শুরু করে শহীদ জিয়া, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আমরা ধীরে ধীরে দেশকে খাদের কিনারা থেকে ফিরিয়ে এনেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন সূত্র থেকে খবর পাওয়া যাচ্ছে, ষড়যন্ত্রগুলো এখানে থেমে যাবে না, বরং আরও ভয়াবহ হতে পারে। তবে আমাদের ভয় পেতে হবে না, আতঙ্কিত হওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। বরং মানুষকে সাহস জোগাতে হবে, নিজেদের ঐক্যবদ্ধ করতে হবে, দেশের সাধারণ নাগরিকদের সচেতন করে তুলতে হবে। যত বেশি আমরা একাত্ম হবো, যত বেশি সামনে এগোবো, যত বেশি মরিয়া হয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করবো— এটিই ষড়যন্ত্রকারীদের পিছু হটতে বাধ্য করবে।’
তারেক রহমান দাবি করেন, ‘‘বিএনপিরই একমাত্র শক্তি বা ক্ষমতা এই ষড়যন্ত্রগুলো ঠেকাতে পারে।’’ চট্টগ্রাম ও ঢাকায় দলের প্রার্থীর ওপর গুলির ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এসব ঘটনাগুলো কোনো ফায়দা নেওয়ার চেষ্টার অংশ।’
তিনি বিএনপির বিভিন্ন পরিকল্পনা যেমন খাল খনন, স্বাস্থ্য ও কৃষি কার্ড, ফ্যামিলি কার্ড, শিক্ষাব্যবস্থা উন্নয়ন, বেকার সমস্যার সমাধান, তথ্য প্রযুক্তি, বায়ু ও পানিদূষণ রোধ প্রভৃতি প্রসঙ্গে বিস্তারিত তুলে ধরেন ও প্রকল্পের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘এখন আমাদের সময় এসেছে— আমি কি পেয়েছি, তা ছাড়িয়ে আসতে হবে। আমাদের লক্ষ্য হলো, দেশ ও জাতির জন্য কি করতে পারলাম সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। আজকের দিন থেকে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা নয়, বরং একযোগে কাজ করতে হবে। যদি আপনি কিছু করে থাকেন বা করতে পারেন, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ভালো কিছু রেখে যেতে পারবেন। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত, দেশে শান্তি, শৃঙ্খলা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন আর ঘরে বসে থাকার সময় নয়। আমাদের এই সংগ্রামে জয় লাভ করতে হবে। জয় নিশ্চিত করতে একমাত্র নিশ্চিত শক্তি হলো— বাংলাদেশের জনগণ। তাদের সাথে নিয়ে এই সংগ্রাম জিততেই হবে।’
এ বিষয়ে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, এবং সঞ্চালনায় ছিলেন যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল।
Leave a Reply