বাংলাদেশ ব্যাংক প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়ানোর পাশাপাশি রেমিট্যান্স পাঠানোর সঙ্গে যুক্ত খরচগুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য নতুন একটি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পুরোপুরি ট্র্যাক রাখবে যে, দেশের প্রবাসীরা কিভাবে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন এবং এর সাথে জড়িত বিভিন্ন খরচের বিষয়গুলো।
নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, সকল বাণিজ্যিক ব্যাংক ও এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোকে প্রতিটি রেমিট্যান্স লেনদেনের বিস্তারিত তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে পাঠাতে বলা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, প্রেরণের তারিখ, ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউসের নাম, লেনদেনের উপকরণ, রেমিট্যান্সের অর্থের সংগ্রহের পদ্ধতি, টাকায় রেমিট্যান্সের পরিমাণ ও প্রণোদনার হিসাব, ডলারের বিপরীতে বিনিময় হার, দান্দলা থেকে প্রেরিত ডলার রেমিট্যান্সের পরিমাণ, রেমিট্যান্স পাঠানোর মুদ্রা, ফি, ভ্যাট বা কর ও অন্যান্য খরচ, পাশাপাশি মোট খরচের বিবরণ।
এই তথ্যগুলো প্রতিদিনের ভিত্তিতে পরবর্তী দিন সকাল ১২টার মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠানোর নিয়ম রয়েছে। এ ব্যাপারে কংক্রিট নির্দেশনা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের তরফে সম্প্রতি একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে, যা আগামী ১ জানুয়ারির মধ্যে কার্যকর হবে।
বিশ্বব্যাংকও বর্তমানে বিভিন্ন দেশে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের খরচ মনিটরিং করছে। দেখা গেছে, খরচ বেড়ে যাচ্ছে, যা নিয়ন্ত্রণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক এটি করছে। বিভিন্ন দেশের ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো রেমিট্যান্সের উপর বিভিন্ন ধরনের ফি আরোপ করছে, আর কিছু ক্ষেত্রে করও দিতে হয়। দেশের ব্যাংকগুলোও নানা সার্ভিস চার্জ আদায় করে থাকেন। এসব কারণে রেমিট্যান্স পাঠানোর খরচ বাড়ছে, যা কমানোর জন্য এই উদ্যোগ।
ব্যাংক ও এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোকে প্রতি লেনদেনের বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে, যাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারে। এর ফলে প্রবাসীদের রেমিট্যান্সের খরচ কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। এছাড়া, বর্তমানে দেশে প্রবাসীদের কাছ থেকে রেমিট্যান্স গ্রহণে ব্যাংকগুলো কোনো ফি নিচ্ছে না, যা কিছুটা খরচ কমাতে সহায়ক। পাশাপাশি, বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো রেমিট্যান্সের বিনিময় হার নির্ধারণে একষট্টির মতো পার্থক্য করছে, যা সমতা আনার দিকে এগিয়ে নেওয়া হবে। এই সব পদক্ষেপের মাধ্যমে প্রবাসীদের জন্য রেমিট্যান্স পাঠানো আরো সুবিধাজনক এবং খরচ কমানো সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
Leave a Reply