সর্বশেষঃ
সাবেক ১২ মন্ত্রীসহ ১৪ জনকে আজ হাজির করা হচ্ছে ট্রাইব্যুনালে দীপু মনির সুপারিশে মাউশিতে তিন হাজার পদায়ন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুদকের নতুন মামলার রায় আজ ঘোষণা হবে অভ্যুত্থানকে ‘তথাকথিত’ বলাকে আদালত অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতা মানলেন চিফ প্রসিকিউটর ফিরোজ সরকার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিব খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকে: মাহফুজ আলম বিডিআর হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য ছিল বাহিনীকে দুর্বল করে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার পরিকল্পনা জনপ্রিয় টিকটকার ববি গ্রেভস হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর পর প্রথমবার মুখ খুললেন হেমা মালিনী নায়িকা পপিকে আইনি নোটিশ পাঠালেন চাচাতো ভাই জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী জেনস সুমন আর নেই শাকিবের ‘পাইলট’ লুকের ঝড় সোশ্যাল মিডিয়ায়
বিডিআর হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য ছিল বাহিনীকে দুর্বল করে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার পরিকল্পনা

বিডিআর হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য ছিল বাহিনীকে দুর্বল করে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার পরিকল্পনা

জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান বলেছেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের প্রধান লক্ষ্য ছিল শেখ হাসিনার ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করা এবং বিডিআর ও অন্যান্য সামরিক বাহিনীকে দুর্বল করে দেওয়া। রোববার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পরে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

ফজলুর রহমান বলেন, এই তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য তিনি ১১ মাস পর কাজটি সম্পন্ন করেছেন। তিনি জানান, এর মধ্যে তারা ২৪৭ জনের সাক্ষ্য নিয়েছেন। এর মধ্যে শহীদ পরিবারের ১৪ সদস্য, রাজনীতিবীদ ১০ জন, অসংকল সরকারের উপদেষ্টাসহ ২ জন, সামরিক কর্মকর্তা ১৩০ জন, পুলিশ ২২ জন, বেসামরিক ব্যক্তি ৯ জন, বিডিআর ও বিজিবি সদস্য ২২ জন, কারাগারে থাকা ২৬ জন এবং তিনজন সাংবাদিকের জবানবন্দি রয়েছে। তিনি আরও জানান, তারা এ সময় মোট ৬০০ ঘণ্টার ভিডিও সাক্ষাৎকার ও রেকর্ডিং পর্যালোচনা করেছেন, প্রায় ৮০০টি স্থিরচিত্র ও ছবি সংগ্রহ করেছেন। সংবাদপত্র, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে প্রচুর তথ্য ও চিঠিপত্রও সংগ্রহ করা হয়েছে।

তিনি বলেছিলেন, সেনাবাহিনী পরিচালিত ছয়টি তদন্ত প্রতিবেদন ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রাণালয়তেও এর প্রতিবেদন ফেরত পাঠানো হয়েছে। কয়েকটি তদন্ত প্রতিবেদনের উল্লেখযোগ্য অংশও ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন ওয়েবসাইট, ই-মেইল ও জবানবন্দির ভিডিও ক্লিপে প্রায় ৩১৬টি তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রাথমিকভাবে এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারীদের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি কারা ছিলেন তা উল্লেখ করে বলেন, তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, শেখ সেলিম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মির্জা আজম, সাহারা খাতুন, নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল তারেক সিদ্দিকী, সেনাপ্রধান জেনারেল মঈন ইউ আহমেদ এবং ডিজিএফআই এর প্রধান মেজর জেনারেল আকবর ছিলেন মূল masterminds।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি মন্তব্য করেন, 당시 সরকারের লক্ষ্য ছিল ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করা এবং বাহিনীগুলোকে দুর্বল করে দেওয়া। ষড়যন্ত্রের দীর্ঘ সময় ধরে চলে আসছে বলে তিনি জানান, এই পরিকল্পনা শেখ হাসিনার ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই শুরু হয়। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে তারা এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত ছিল বলে তিনি উল্লেখ করেন, যেখানে তারা ভারতের দিকেও আঙুল তুলেছেন।

সেনা অভিযানে না যাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, তখনকার সেনাপ্রধান জেনারেল মঈন বলেছিলেন, এই জরুরি পরিস্থিতিতে সেনা অভিযান চলালে ভারত হস্তক্ষেপ করত এবং এটি ১৯৭১ সালের মতো পরিস্থিতির কারণ হয়ে যেত। তিনি জানান, দুই দিনে ৫৭ অফিসার নিহত হলেও সেই সময়ে দেশের স্বাধীকার ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা সম্ভব হত না।

বিডিআর বিদ্রোহের পর গুম হয়ে যাওয়া পাঁচজন সেনা কর্মকর্তার ব্যাপারে তিনি বলেন, তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিজিএফআই হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল।

ডাল-ভাত কর্মসূচির সূত্র ধরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে কি মনে করেন এই প্রশ্নে তিনি বলেন, এই ষড়যন্ত্রের পেছনে ছিল একটি বড় পরিকল্পনা। বাহিনীগুলোকে দুর্বল করে শেখ হাসিনার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য এই ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।

জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের সভাপতির মতে, লেফটেন্যান্ট কর্নেল থেকে জেনারেল আজিজ আহমেদের পরিবর্তে পরে তাকে প্রোমোশন দিয়ে ডিজি বিজিবি করা হয়।

বিডিআর বিদ্রোহে বাইরে থেকেও অনেকে যুক্ত ছিল বলে তিনি উল্লেখ করেন, এর মধ্যে ৯২১ জন ভারতীয় বাংলাদেশে প্রবেশ করে, যাদের মধ্যে ৬৭ জনের কোনো হিসাব মেলেনি। তাদের অবস্থান ও পদচিহ্ন অধরা থাকায় সরকারের কাছে এর জন্য সুপারিশ করেছেন, ভারতের সংশ্লিষ্ট দিকগুলোও তিনি জানাতে বলেছেন।

গোয়েন্দা ব্যর্থতা সম্পর্কেও তিনি জানান, ঘটনা তদন্তে গোয়েন্দা ব্যর্থতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তিনি পরামর্শ দিয়েছেন, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কার্যক্রমকে শক্তিশালী করে নতুনভাবে পুনর্গঠন করতে হবে। বিভিন্ন উপায়ে এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে।

পিলখানার হত্যাকাণ্ডের সময় অনেকে হিন্দি ভাষায় কথা বলছিল বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।

তদন্তে দেখা গেছে, এই বিদ্রোহে শুধু বিডিআর এর সদস্যরাই অংশগ্রহণ করেনি, বরং বাইরে থেকেও অনেক মানুষ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল। সাক্ষ্যপ্রমাণে উঠে এসেছে, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কিছু সদস্যও এই বিদ্রোহে অংশ নেয়। একদল শতাধিক সদস্য বিদ্রোহস্থল ছেড়ে ২০০ জনের বিশাল একটি মিছিলে যোগ দিয়েছিল, যারা পরে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY Shipon tech bd