গুয়াহাটির মাঠে ভারতের বিরুদ্ধে তাদের দুর্দান্ত জয় উদযাপন করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা, যেখানে তারা চারশো আট রানে জয়লাভ করে। এই জয় এই দেশের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি দীর্ঘ ২৫ বছর পর ভারতের মাটিতে প্রথম সিরিজ জয়। দলটির জন্য এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত, যেখানে তারা তাদের প্রথমবারের মতো হ্যান্সি ক্রনিয়ের অধীনে ২০০০ সালে সিরিজ জিতেছিল। এবার আবারও বাভুমার নেতৃত্বে সেই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনলেন প্রোটিয়ারা। অধিনায়ক হিসেবে এটি তার ১১ তম জয়, যা তার টেস্ট ক্যারিয়ারে এক অনন্য মর্যাদার নিদর্শন।
সুপার স্পোর্টসের একটি অসম্ভব লক্ষ্য ছিল ৫৪৯ রানের। তবে ভারত একদিনের মধ্যে হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর জন্য এক রকম লড়াই করছিল। শেষ দিনে তাদের কাছে ছিল ৮ উইকেট, আর তারা ২ উইকেটে ২৭ রান করে খেলা শুরু করেছিল। তবে মাত্র ১৩ রানের মধ্যে ভেঙে পড়ল ভারতের ব্যাটিং লাইন, যেখানে সিমন হারমার এক ওভারে কুলদীপ যাদব ও ধ্রুব জুরেলকে আউট করে দিলেন। এরপর ভারতীয় অধিনায়ক ঋশাভ পান্তকে মাঠে থেকে নিয়ে গেলেন। ৫৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ভারতের জন্য পরিস্থিতি কঠিন হয়ে দাঁড়াল।
কিন্তু সেখানে থাকলেন সাই সুদর্শন ও রবীন্দ্র জাদেজা, যারা কঠিন প্রতিরোধ গড়লেন। সুদর্শন ১৩৮ বলের মধ্যে অপরাজিত ১৪ রান করে থাকলেন, আর জাদেজা ৪০ বলে ২৩ রানে টিকে থাকলেন। মনে হচ্ছিল, আবারও ভারতের ড্র করার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।
তবে চা বিরতিতে ফিরতেই দক্ষিণ আফ্রিকা আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠল। দ্বিতীয় সেশনের পঞ্চম বলেই সুটোদের জুটি ভেঙে গেল। সুদর্শন ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন, যখন তিনি ১৩৯ বলে ১৪ রান করছিলেন। এরপর, ওয়াশিংটন সুন্দর ও জাদেজার সর্বোচ্চ মানের প্রতিরোধে ম্যাচ অল্প সময়ের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। ৭৭ বলে ৩৫ রানের একটি জুটি গড়ে তারা মারক্রামের বলের শিকার হন। তার ক্যাচ নিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়েন দক্ষিণ আফ্রিকার ফিল্ডাররা, যেখানে মারক্রাম এক টেস্ট ম্যাচে সর্বোচ্চ ৯ ক্যাচ নিয়ে নতুন রেকর্ড করে ফেলেন।
আনন্দর পাশাপাশি জাদেজা কিছুটা লড়াই চালিয়ে যান, তবে শেষমেশ তিনি ও সিরাজের উইকেট পড়ে যায়। হারমার এই ম্যাচে প্রথম ইনিংসে ৯ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা হয়। মোট দুই ইনিংসে তিনি ১৭ উইকেট শিকার করেন, যা সিরিজের অন্যতম সেরা পারফরম্যান্স। অন্যদিকে, ম্যাচসেরা হন জানসেন, যিনি ব্যাট ও বল দুইই দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেন। প্রথম ইনিংসে ৯৩ রান করে এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেট নিয়ে ম্যাচে এক প্রকৃত নায়ক হিসেবে আবির্ভূত হন। এই দুই ইনিংস মিলিয়ে তিনি মোট ৭ উইকেট নিয়েছেন, যা এই সিরিজের অন্যতম স্মরণীয় পারফরম্যান্স।
Leave a Reply