সর্বশেষঃ
সাবেক ১২ মন্ত্রীসহ ১৪ জনকে আজ হাজির করা হচ্ছে ট্রাইব্যুনালে দীপু মনির সুপারিশে মাউশিতে তিন হাজার পদায়ন ‘সিনেমা বানিয়েও এত টাকা পাইনি’, ইউটিউবের মাধ্যমে বিপুল আয় ফারাহ খানের প্রখ্যাত নির্মাতা শেখ নজরুল ইসলাম আর নেই বর্ষীয়ান অভিনেতা ধর্মেন্দ্র আর নেই গায়িকা রোজাকে গুলি করে হত্যা, হাসপাতালে মৃত্যু সম্পত্তির অমূল্য খাতি রেখে গেলেন ধর্মেন্দ্র, হেমা মালিনী কিছুই পাবেন না! বাংলাদেশ আয়ারল্যান্ড সিরিজের টি-টোয়েন্টি দলে চমক রাখলেন তরুণ ক্রিকেটার বাংলাদেশের সুপার ওভারে পাকিস্তানের বিপক্ষে হেরে স্বপ্নভঙ্গ মেসির এক গোল এবং তিন অ্যাসিস্টে মিয়ামি এমএলএস কাপের দৌড়ে খুব কাছাকাছি বাংলাদেশের শক্তিশালী পারফরম্যান্স: ব্রুনেইকে ৮-০ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয় জয় আগে থেকেই জানা গেল, ভারত-পাকিস্তান মহারণের তারিখ ১৫ ফেব্রুয়ারি
জি-২০ সম্মেলন: ট্রাম্পের বয়কট সত্ত্বেও ১২২ দফার যৌথ ঘোষণা গৃহীত, চীনের দাবি-নজরে দক্ষিণ আফ্রিকা

জি-২০ সম্মেলন: ট্রাম্পের বয়কট সত্ত্বেও ১২২ দফার যৌথ ঘোষণা গৃহীত, চীনের দাবি-নজরে দক্ষিণ আফ্রিকা

দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত হলো বিশ্ববিখ্যাত গ্লোবাল অর্থনৈতিক জোট, জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন। এই দুই দিনব্যাপী (২২-২৩ নভেম্বর) সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন বিশ্বের নানা দেশের নেতারা। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই সম্মেলন বর্জন করেন, ফলে এটি ছিল অন্যতম আলোচিত বিষয়। তবুও, এর পরও নেতারা ঐক্যবদ্ধভাবে ১২২ দফা যৌথ ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন, যা বিশ্বজুড়েই ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে এখানে চীনের দৃঢ় উপস্থিতি ও কার্যক্রমের বিষয়টি বেশ নজরকাড়া।

সম্মেলনের মূল কারণ ছিল ট্রাম্পের অংশগ্রহণের অভাব। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন যাবৎ শেতাঙ্গ কৃষকদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ তুলে আসছেন। এই কারণে তিনি সম্মেলনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তবে তার এই সিদ্ধান্তের পরও নেতারা ঐক্যবদ্ধভাবে জলবায়ু পরিবর্তন, বৈষম্য রোধ, ফিলিস্তিনে শান্তির জন্য জোরালো আহ্বান জানিয়ে একমত হন। যুক্তরাষ্ট্রের এই বয়কটের কারণে কিছু অস্বস্তি দেখা দেয়, বিশেষ করে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ উদ্বেগ প্রকাশ করেন যে, এভাবেই জোটটির একতা ভঙ্গ হতে পারে। যেহেতু জোটের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারও এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

বৈঠকে চীনা প্রেসিডেন্টের পরিবর্তে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী একতরফাবাদ ও সুরক্ষাবাদের প্রভাব বাড়ছে। এতে দেশ দেশান্তরীয় সংহতির সংকট বেড়ে চলেছে। পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী নেতৃত্ব দেওয়ার বিষয় নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে সংকট দেখা দেয়। সম্মেলনের শেষে সাধারণ জোটের সভাপতিত্বের দায়িত্বের ঘোষণা হওয়ার পরও, যুক্তরাষ্ট্রের অংশগ্রহণ না থাকায় নেতৃত্ব হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় জটিলতা দেখা দেয়। এ থেকে বোঝা যায়, সম্মেলনের শিখরে হঠাৎ করে এই ভাটা সৃষ্টি হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা বলেন, ‘আমরা এই প্রথমবারের মতো এই সম্মেলনের সভাপতিত্ব করছি; এর সম্মান আমরা হারাতে দেব না।

অভ্যন্তরীণ নানা অশান্তি ও রাজনৈতিক ঝামেলার মধ্যেও, গত আগস্টে রামাফোসা যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন। তখন ট্রাম্প তার বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ কৃষকদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তোলে। এই অভিযোগ রামাফোসা তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেন, যা ট্রাম্পের সম্মেলনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোনাল্ড লামোলা বলেন, ‘ট্রাম্পের অনুপস্থিতি জোটের কার্যক্রমকে পঙ্গু করতে পারবে না। এই সংগঠন কারো ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়; এটি অংশগ্রহণকারী দেশের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত।

২০২৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের দায়িত্ব গ্রহণের কথা রয়েছে। তারা পরিকল্পনা করেছে, ফ্লোরিডার ট্রাম্পের গলফ ক্লাবে তাদের শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করার। তবে, এই সময়ের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বয়কটের কারণে, অন্যান্য দেশ যেমন- চীন, রাশিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, জাপান ও কানাডা এই ঘোষণাপত্রকে সমর্থন জানিয়েছে।

বিশ্বের উন্নয়নশীল ও দরিদ্র দেশগুলোর জন্য এই সম্মেলনকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। অক্সফ্যাম সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘এবোই ইতিহাসে প্রথম এমন সম্মেলন যেখানে বৈষম্যের শিকার দরিদ্র দেশের অধিকারগুলো অগ্রাধিকার পেয়েছে।’ এই আলোচনায় নেতারা ১২২ দফা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এর মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী আরও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার ক্ষেত্রে তারা ঐক্যমত ব্যক্ত করেন। ব্রাজিলে সদ্য শেষ জলবায়ু সম্মেলনের দিনে, নেতারা ঘোষণা করেন, বিশ্বজুড়ে জলবায়ু অর্থায়ন বাড়াতে হবে। এখন থেকে তা বিলিয়ন থেকে বাড়িয়ে ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়।

এছাড়াও, সংশ্লিষ্ট নেতারা বলেন, দরিদ্র দেশের ঋণ সমস্যা মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে পুনর্বিন্যাস প্রয়োজন। তারা ইউক্রেন, সitania, কঙ্গো ও ফিলিস্তিনে স্থায়ী শান্তির জন্য সমর্থন ব্যক্ত করেন, যদিও এই ৩০ পৃষ্ঠার ঘোষণাপত্রে ইউক্রেনের সংকটটি একবারই উল্লেখ আছে। আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিশ্লেষকদের মতে, নবায়নযোগ্য শক্তির উন্নয়নে উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্য ঘোষণা, দরিদ্র দেশের জন্য সমর্থন ও সহযোগিতার বিষয়গুলো এই সম্মেলনে গুরুত্ব পেয়েছে।

বিশেষ করে চীন, রাশিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, জাপান ও কানাডা অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই বৈঠককে নতুন মাত্রা দেয়। চীনের গাড়ি ব্র্যান্ড যেমন- জেট্যুর, বিএআইসি ও চেরি এই সম্মেলনে অংশ নিয়ে বিভিন্ন যানবাহন সরবরাহ করে, যা ইভেন্টের অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে দেখা গেছে। বিশেষ করে, চীনা প্রযুক্তি ও যানবাহন এখন দক্ষিণ আফ্রিকার সাধারণ রাস্তায় পরিচিত হয়ে উঠছে, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে তাদের জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ছে। এভাবেই এই সম্মেলন আন্তর্জাতিক তথ্যপ্রযুক্তি ও যানবাহনে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের নতুন এক দিক তুলে ধরেছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY Shipon tech bd