ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে সম্পূর্ণভাবে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। বৃহস্পতিবার মিরপুরের শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে আয়ারল্যান্ডকে ৯৮–৫ এ ব্যর্থ করে দিয়ে বাংলাদেশের স্কোর ৩৭৮ রান দিয়ে দিন শেষ করেছে স্বাগতিকরা।
খেলা শুরুর আগে বাংলাদেশের পেসার খালেদ আহমেদ প্রথম আঘাতে পল স্টার্লিংকে ফিরিয়ে দেন, যিনি ২৭ রান করেছিলেন। এরপর স্পিনাররা মাঠে নিজেদের প্রধান ভুমিকা পালন করেন। দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামা বাঁহাতি স্পিনার হাসান মুরাদ ১০ ওভারে মাত্র ১০ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন। এদিকে, তাইজুল ইসলাম ও মেহেদি হাসান মিরাজ প্রত্যেকটি একটি করে উইকেট তুলে নেন। আয়ারল্যান্ডের জন্য এখন কঠিন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তিন দিন বাকি থাকতেই তাদের ইনিংস হার এড়ানোর চ্যালেঞ্জ। লরকান টাকার (১১*) ও স্টিফেন ডোহেনি (২*) তৃতীয় দিন খেলতে নেমে পরিস্থিতির অবনতি না হলে বড় হার তাদের জন্য অবশ্যম্ভাবি।
দ্বিতীয় দিনের খেলার সূচনায় নিজের শততম টেস্টে ১৩তম সেঞ্চুরি অর্জন করেন বাংলাদেশি ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম। গতির দিন তার ৯৯ রানে অপরাজিত থাকার পর, শেষ পর্যন্ত তিনি আউট হন ১০৭ রানে। এই সময় লিটন দাস দুর্দান্ত ১২৮ রান করে থাকেন। মিলিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা দ্বিতীয় সেশনের আগেই ৪৭৬ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেন। আয়ারল্যান্ডের অফস্পিনার অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন ক্যারিয়ার সেরা ৬ উইকেট নেন, তিনি ১০৯ রান দেন। তৃতীয় সেশনে, ২০ ওভারে আট উইকেট তুলে নিয়ে আয়ারল্যান্ডের দুই ওপেনারকেও প্রত্যাহার করা হয়।
প্রথম দিনেই ডেভিড বালবার্নির আউটের মাধ্যমে বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি ভেঙে যায়, যেখানে ৪১ রান সংগ্রহ করছিলেন। এরপর, স্কিপার অ্যান্ড্রু বালবার্নিকে স্লিপে ধরা পড়ে ফিরতে হলেও, তিনি ২১ বলের মধ্যে ২১ রান করেন। বাংলাদেশ দলের জন্য এই ইনিংসে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম, যাদের দুটি বলিষ্ঠ সেঞ্চুরি ছিল। এছাড়া, মোমিনুল হক কিছুটা সামলে খেলেন হাফসেঞ্চুরি করে, এবং মিরাজ ৪৭ রান যোগ করেন।
খেলায় একটি বড় মোড় আসে দ্বিতীয় সেশনে। ৩৮৭–৫ থেকে খেলা শুরু করে, লিটন আর মিরাজের জুটি ১২৩ রান যোগ করেন। কিন্তু মিরাজ ৪৭ রান করে গ্যাভিন হোইয়ের বলের বলে আউট হলে জুটি ভেঙে যায়। এরপর, উচ্চমানের বোলিং করেন ম্যাথিউ হামফ্রিস, যিনি একাই ৫০ ওভার गेंदবল করেন। তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে তিনি ৬ উইকেট তুলে নেন।
অবশ্য, টেলএন্ডাররাও কিছু রান যোগ করে থাকেন। এবাদতের ১৮ রানের ঝড়ো ইনিংস ছিল বিশেষ আকর্ষণীয়। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ১৪১.১ ওভারে অলআউট হয়, এবং ম্যাকব্রাইন শেষ করেন ৬ উইকেট নিয়ে ইনিংস, এটি তার ব্যক্তিগত সেরা।
দুপুরের পর লিটন ও মিরাজের আউট হলেও বাংলাদেশের অবস্থান ছিল শক্তিশালী। লিটন দাস দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে চারটি ছক্কা ও আটটি চারের সাহায্যে ১২৮ রান করেন। তার এই ইনিংসের মধ্যে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়ে তোলেন। তবে শেষ পর্যন্ত, হাম্পফ্রিসের ফুল লেংথের বল খেলে স্লিপে স্টার্লিংয়ের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। এর আগে, মিরাজ ৪৭ রানে আউট হয়ে যান। সিরিজের প্রথম টেস্টে সিলেটে বাংলাদেশ ইনিংস ও ৪৭ রানে জিতেছিল। এখানেও বাংলাদেশ জোড়ালোভাবে এগিয়ে থাকায়, ধারাবাহিকতায় কৃতিত্ব নিজের করে নিচ্ছে যোগ্যতার সাথে।
Leave a Reply