অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত পতনের জন্য অন্য দেশের গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট হিসেবে কাজ করার অভিযোগে রমনা মডেল থানায় সন্ত্রাস দমন আইনের বাদে মামলায় বাংলাদেশের বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক এনায়েত করিম চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইসতিয়াকের আদালত এই আদেশ দেন। এর আগে তার বিরুদ্ধে এই মামলায় দুই দফায় মোট সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছিল।
ঘটনার প্রাথমিক পর্যায়ে, ১৩ সেপ্টেম্বর সকালে মিন্টো রোডের মন্ত্রী পাড়ায় সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন এনায়েত করিম। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি প্রাডো গাড়িতে করে ঘোরাফেরা করছিলেন। তখন পুলিশ তাকে থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে কোনও সন্তোষজনক উত্তর দেননি তিনি। পরে বিকেলে তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন পুলিশ। প্রথমে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়ে রিমান্ডের শুনানি ১৫ সেপ্টেম্বর ধার্য করা হয়। সেই দিন তার রিমান্ডের দুই দিন মঞ্জুর হয়। এরপর ১৬ সেপ্টেম্বর তার সহযোগী গোলাম মোস্তফা আজাদকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরবর্তীতে, তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিন করে রিমান্ড চাওয়া হলে আদালত প্রত্যেকের জন্য একই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ১৩ অক্টোবর আবারও ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবেদন করেন। আদালত সেই শুনানিতে, আসামি উপস্থিত থাকাকালীন, তার জামিনের আবেদন বাতিল করে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, ১৩ সেপ্টেম্বর সকালে মিন্টো রোডে সন্দেহজনকভাবে চলাফেরা করছিলেন এনায়েত করিম। তাকে গাড়ি থেকে নামানোর পর জিজ্ঞাসাবাদে তিনি কোনও উত্তর দিতে পারেননি। পুলিশ তার কাছ থেকে দুইটি আইফোন উদ্ধার করে এবং বিশ্লেষণে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদ্ধার হয়। জানা যায়, তিনি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ও মার্কিন নাগরিক এবং ৬ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক থেকে কাতার এয়ারলাইন্সে করে ঢাকায় আসেন। তিনি জানান, তিনি এক বিশেষ দেশের গোয়েন্দা সংস্থার চুক্তিভিত্তিক এজেন্ট। বর্তমানে অবস্থা খুবই উদ্বেগজনক, কারণ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার খুব দুর্দশাগ্রস্ত এবং সেনাবাহিনীর সাথে দূরত্ব বাড়ছে। এনায়েত করিম গণমাধ্যমে বলেন, তিনি সরকারের পরিবর্তন করে নতুন সরকার গঠনের জন্য কাজ করছেন।
তিনি আরো জানিয়ে ছিলেন, কেবল চলতি সময়ের লক্ষ্য নিয়ে তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তার সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছেন। তার মতে, অ্যামেরিকা বাংলাদেশের পরিস্থিতিতে হতাশ, এবং ২১ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের পরে, নতুন সরকার গঠন বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে। নতুন সরকারের অংশীদারিত্ব ও প্রধানের বিষয়টি আমেরিকা নির্ধারণ করবে, বলে তিনি দাবি করেন।
এনায়েত করিম তার এই কর্মকাণ্ডের মধ্যে চুক্তিভিত্তিক গোয়েন্দা সংস্থার জন্য তথ্য সংগ্রহ আর বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে কাজ করছেন বলে অভিযোগ।
আসামির বিরুদ্ধে রমনা মডেল থানায় সন্ত্রাস দমন আইনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। অপরাধের দায়ে তার সহযোগীসহ আরও কয়েকজন গ্রেপ্তার ও কারাগারে আছেন, যাদের মধ্যে রয়েছেন, রওশনপন্থী জাতীয় পার্টির মহাসচিব, সাংবাদিক ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
Leave a Reply