আসামের প্রিয় গায়ক ও রাজপুত্রখ্যাত জুবিন গার্গের মৃত্যুর রহস্য এখনো স্পষ্ট হয়ে ওঠেনি। ১৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে স্কুবা ডাইভিং করার সময় তার মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ভক্তরা দাবি করছে, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এরই মধ্যে আসামের পুলিশ জুবিনের ব্যান্ডের দুই সদস্য, তার দেহরক্ষী, সিঙ্গাপুরের একটি ফেস্টিভ্যালের আয়োজনকারী প্রতিষ্ঠান ও এক আত্মীয়কে গ্রেফতার করেছে।
গতকাল বুধবার গ্রেফতারকৃতদের বকসা জেলা কারাগারে হাজির করা হয়। এ খবর জানার সঙ্গে সঙ্গেই গায়কের ভক্তরা কারাগারের বাইরে জড়ো হয়ে ওঠে। পুলিশ যখন অভিযুক্তদের কারাগারে পৌঁছায়, তখন তারা জোরালো স্লোগানে অভিযুক্তদের বিচারের দাবি জানায়।
অভিযুক্ত দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে আসাম-বাংলাদেশের অনেক অনুরাগী। তারা পুলিশের ভ্যান লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়াতে শুরু করে। এতে পুলিশের ভ্যান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উত্তেজিত জনতা পরে পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন লাগায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ প্রথমে লাঠিচার্জ করে, এরপর ফাঁকা গুলি ও টিয়ার গ্যাস ছোঁড়ে।
বিক্ষোভের কারণে কারাগার ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ইন্টারনেট ও মোবাইল পরিষেবাও সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। কারাগারের বাইরে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি ঠেকাতে ১৬৩ ধারা জারি করা হয়েছে।
বকসা জেলা কারাগারে র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স (আরএএফ)-এর সদস্যরা মোতায়েন করা হয়েছে। নতুন ঝামেলা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
জুবিনের মৃত্যুর পর সিঙ্গাপুর পুলিশ জানিয়েছে তিনি স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেছেন। তবে গায়কের স্ত্রী গরিমা ও ভক্তরা অভিযোগ করেন, তার মৃত্যুতে কোনো ষড়যন্ত্র রয়েছে। এই বিষয়ে সত্যতা জানার জন্য আসাম সরকার একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) গঠন করে।
অপরদিকে, আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বুধবার বকসার ঘটনাকে অত্যন্ত দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, কিছু রাজনৈতিক দল জুবিনের মৃত্যুকে ব্যবহার করে রাজ্যে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চাইছে। যারা হিংসা উসকে দিচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply