প্রথম টি-টোয়েন্টির মতো দ্বিতীয় ম্যাচেও একই রূপে দেখা গেল বাংলাদেশের দৃশ্যপটে। রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই কিছুটা পিছিয়ে গেল দল, কিন্তু শেষমেশ নেতৃস্থানীয় খেলোয়াড়দের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে সাফল্য অর্জন করে। নুরুল হাসান সোহান ছিলেন ম্যাচের নায়ক, তিনি শেষের দিকের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে জয়ে অবদান রাখেন। প্রথম ম্যাচে রিশাদ হোসেনের সঙ্গে সাফল্য পেয়ে আজ শরিফুল ইসলামকে পেয়েছেন, যা দলের পরিকল্পনাকে আরও শক্তিশালী করে তোলে। এই জয়ে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজের প্রথম ম্যাচে জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশের কোচ ফিল সিমন্সের শিষ্যরা।
অর্থাৎ, টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশের অধিনায়ক জাকের আলী। শুরুতেই আফগান ওপেনার সেদিকউল্লাহ অতাল ও ইব্রাহীম জাদরানকে সংগ্রহ করতে গিয়ে অসুবিধায় পড়তে হয় বাংলাদেশের বোলারদের। পাওয়ার প্লে-তে তারা উইকেট না হারালেও মাত্র ৩৫ রান তুলতে সক্ষম হন।
আফগান ওপেনার সেদিকউল্লাহ ১৯ বলে ২৩ রান করে রশিদ হোসেনের উইকেটের শিকার হন, এরপরই ইব্রাহীম ৩৭ বলে ৩৮ রানে ফিরে যান নাসুম আহমেদের শিকার হয়ে। ওমরজাই ও দারউইশ রাসুলী শেষ দিকে ধীরে ধীরে নেয়াঠে পারেননি, কিন্তু অবিচ্ছিন্ন ২৯ রানের জুটিতে দলকে ১৩০ রান পার করে দেন। আফগানদের ইনিংসশেষে সব মিলিয়ে ১৫০ রানের কাছাকাছি সংগ্রহ করে তারা।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে নাসুম ও রিশাদ দুটি করে উইকেট পান, শরিফুল ইসলাম এক উইকেট নেন। মুস্তাফিজুর রহমান দুর্দান্ত বোলিং করলেও উইকেট পাননি, তবে দলকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ অবস্থানে রাখতে সহায়তা করেন।
ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশের জন্য শুরুটা ছিল চ্যালেঞ্জের, তানজিদ হাসান তামিম ও পারভেজ হোসেন ইমন দুজনই প্রথম ওভারে আউট হয়ে যান। তামিম প্রথম ওভারে ফিরে যান, যখন আজমতউল্লাহ ওপরজাই তার ক্যাচ নিতে সক্ষম হন। এরপর দ্রুতই সাইফ হাসান ও জাকের আলীও ফিরে যান। তবে, দলের মধ্য থেকে জাকের আলী ও শামীম পাটোয়ারির জুটিতে রান গড়ে ওঠে, যা দলের স্বপ্ন দেখার জন্য আশাজাগানিয়া ছিল। ১৩.৫ ওভারে দলীয় শতক পূর্ণ করে বাংলাদেশ।
শুরুতে হাফ সেঞ্চুরিয়ান শামীম পাটোয়ারি ৩৩ রান করে বিদায় নেন এবং এরপরই দলের বিপদ বাড়ে। এই দুর্যোগের মধ্যেও নুরুল হাসান সোহান দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তিনি কৌশলে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আউট হন, আর তার পরিবর্তে নাসুম যোগ দেন। ১৭তম ওভারে রশিদের শেষ বলে ১১ বলে ১০ রান করে বোল্ড হন নাসুম, এরপর সাইফউদ্দিন ও রিশাদ আহমেদ দ্রুত ফিরে যান। এই সময় বাংলাদেশের দরকার ছিল ১৯ রান।
সোহান তার সাবলীল ব্যাটিং দিয়ে ১৭ রান হাঁকান, আর শরিফুল ইসলাম চার হাঁকান, ফলের এই ওভারে ১৭ রান আসে। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ৫ উইকেটে ১০২ রান সংগ্রহ করে। তবে পরে, ম্যাচের শেষার্ধে বাজে পারফরম্যান্সে ব্যাটাররা ধাক্কা খায়, ১০ উইকেটে ১৪৮ রানে শেষ হয় আফগানিস্তানের ইনিংস।
বিশেষ উল্লেখ, বাংলাদেশের বিপুল পরিমাণ উইকেট পতনের মধ্যেও জাকের আলী অনিক ও শামীম পাটোয়ারির ব্যাটে আশা বজায় ছিল। জাকের আলী ২৫ বলে ৩২ রান করে যান, যেখানে তার ব্যাটে ছিল দুটি চার ও দুটি ছক্কা। শামীমের সঙ্গে তার জুটি ৫৬ রানের, যা দলের জন্য আশার আলো। কিন্তু আউট হওয়ার কিছু সময় পরে, শামীমও ফিরে যান। শেষদিকে তারকা ব্যাটাররা নিরবচ্ছিন্নভাবে অবিরত ব্যাট চালিয়ে যান।
অপরদিকে, বাংলাদেশকে বড় সংগ্রহের জন্য শেষ ওভারে ১৯ রান দরকার ছিল। সোহানের ছক্কা ও শরিফুলের চার এই ওভারকে স্মরণীয় করে তোলে। এই জয়ের জন্য বাংলাদেশের পুরো দলের সাহসিকতা ও দৃঢ়তা ছিল অপরিহার্য।
Leave a Reply