সর্বশেষঃ
সাবেক ১২ মন্ত্রীসহ ১৪ জনকে আজ হাজির করা হচ্ছে ট্রাইব্যুনালে দীপু মনির সুপারিশে মাউশিতে তিন হাজার পদায়ন ভারতে বাংলাদেশি মিশনগুলো টার্গেট করেছে উগ্রবাদীরা মমতার বক্তব্য রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সঠিক পদক্ষেপ নয় বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিসেনা পাঠানোর প্রস্তাব মমতার বিদ্যুৎ বিল বাবদ বাংলাদেশ সরকারের কাছে বকেয়া ১৩৫ কোটি টাকা চাইলো ত্রিপুরা সরকার সিলেট সীমান্ত দিয়ে ভারতের হিন্দু মঞ্চের কয়েকশ’ নেতাকর্মীর বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা ভূমি উপদেষ্টার ছেলের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা ভারতের করিমগঞ্জে বিক্ষোভকারীদের বাধায় জকিগঞ্জ দিয়ে পণ্য আসা বন্ধ বাংলাদেশিদের জন্য বন্ধ হলো ভারতের হোটেল বিলোনিয়া সীমান্তে ভারতীয়দের বাংলাদেশবিরোধী বিক্ষোভ, বিজিবির প্রতিবাদ তারেক রহমানের দেশে ফিরতে বাধা কোথায়?
৩০০ বিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি

৩০০ বিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি

অবশেষে জলবায়ু সংকটের ঝুঁকিতে থাকা দরিদ্র দেশগুলোকে প্রতিবছর ৩০০ বিলিয়ন (৩০ হাজার কোটি) ডলার দেবে শিল্পোন্নত দেশগুলো। ২০৩৫ সাল পর্যন্ত এ অর্থ দেওয়া হবে। দীর্ঘ দরকষাকষির পর রোববার ভোরে আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে এ অর্থায়নের বিষয়ে একমত হন প্রায় ২০০টি দেশের প্রতিনিধিরা। তবে কার্বনডাই অক্সাইড নিঃসরণ কমানোর চুক্তিতে ঐকমত্য হলেও সাহায্যের পরিমাণকে অপমানসূচক হিসাবে আখ্যা দিয়েছে সমালোচক আর অনুন্নত দেশগুলো। এছাড়া চুক্তিটি কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে সন্দিহান পরিবেশবাদীরা। এ বছর বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি পোষাতে বছরে ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন (১ লাখ ৩০ হাজার কোটি) ডলার চেয়েছিল। জলবায়ু পরিবর্তনে অন্যতম দায়ী উচ্চ হারে কার্বনডাই অক্সাইড নিঃসরণ। যার ৮০ শতাংশ করে থাকে উন্নত দেশগুলো। তাই প্যারিস জলবায়ু সম্মেলন থেকে আওয়াজ উঠে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার। পরে তহবিল গঠনে একমত হলেও তেমন তোড়জোড় ছিল না অর্থায়নে।

আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে জাতিসংঘের ২৯তম জলবায়ু সম্মেলনে অগ্রাধিকার ছিল অর্থায়নের বিষয়টি। দুই সপ্তাহব্যাপী সম্মেলনে বিভিন্ন সেশনে এ নিয়ে চলে নানা বিতর্ক আলোচনা। শুক্রবার আয়োজনের সমাপ্তি টানার কথা থাকলেও সমঝোতা না হওয়ায় দীর্ঘ হয় আলোচনা। ধনী দেশগুলোর গড়িমসিতে ক্ষুব্ধ হয় জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত বেশকিছু দরিদ্র রাষ্ট্র। দুর্যোগে পর্যুদস্ত এই দরিদ্র দেশগুলো বিশ্বের দূষণের জন্য দায়ী বিত্তবান দেশগুলোর প্রতিশ্রুত এই তহবিলকে ‘অপমানজনক নগণ্য’ হিসাবে অভিহিত করেছে। আলোচনা স্থল থেকে তারা ওয়াকআউট করেন। দীর্ঘ ৩০ ঘণ্টা পর নাটকীয়ভাবে হয় সমঝোতা। একমত হন প্রায় ২০০ দেশের প্রতিনিধি। তবে, এতে অসন্তোষ জানায় পানামা, নাইজেরিয়া, কিউবাসহ বেশকিছু স্বল্পোন্নত দেশ। না মানার ঘোষণা দেয় ভারত। কপ-২৯ এর পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, শিল্পোন্নত দেশগুলোতে প্যারিস চুক্তির বিরোধিতাকারী রাজনৈতিক নেতারা ক্ষমতায় ফিরতে শুরু করেছেন। ফলে ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলার তহবিলের অর্থ অঙ্গীকার করতে রাজি হচ্ছে না উন্নত দেশগুলো। কপ-২৯ সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে ক্ষতিকর দেশগুলো কী পেল, সে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

ভারত তহবিলের অঙ্ককে নিতান্তই কম বলে তা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ভারতের প্রতিনিধি চাঁদনি রেইনা কড়া ভাষায় বলেন, ‘এটা খুবই নগণ্য অঙ্ক।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই নথিপত্র একটি অপটিক্যাল ভুলের চেয়েও বেশি। আমাদের মতামত অনুসারে এই তহবিল যে ঝুঁকি আমরা সবাই মোকাবিলা করছি তা মেটাতে পারবে না।’ বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশ হিসাবে বিবেচিত সিয়েরা লিওনের জলবায়ুমন্ত্রী জিও আবদুলাই এই উদ্যোগকে উন্নত দেশগুলোর ‘সদিচ্ছার অভাব’ হিসাবে অভিহিত করে বলেন, ‘ফলাফল হিসাবে যা এসেছে, তা দেখে আমরা খুবই হতাশ।’ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ার ঝুঁকিতে থাকা ছোট দ্বীপদেশ মার্শাল আইল্যান্ডের জলবায়ু প্রতিনিধি টিনা স্টেজ বলেন, তিনি এই সম্মেলন থেকে লড়াই শেষে সামান্য কিছুই নিয়ে যেতে পারবেন। তিনি বলেন, ‘এটা পর্যাপ্ত নয়, তবে এটা শুরু হলো।’

এ ঘোষণার পর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি। তবে শুক্রবার খসড়া চুক্তিতে বছরে ২৫০ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রস্তাব করায় বাংলাদেশ গভীর হতাশা প্রকাশ করে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান একে খুবই হতাশাজনক একটি প্যাকেজ বলে অভিহিত করেছিলেন। এর আগে শুক্রবার সম্মেলনে খসড়া চুক্তিতে বছরে ২৫০ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তবে ওই প্রস্তাব নাকচ করে দেয় দরিদ্র দেশগুলো।

চূড়ান্ত চুক্তি অনুযায়ী, ২০৩৫ সাল পর্যন্ত দরিদ্র দেশগুলোকে প্রতিবছর অন্তত ৩০০ বিলিয়ন ডলার দেবে উন্নত দেশগুলো। জলবায়ু তহবিলে জমা দেওয়া এই অর্থ দরিদ্র দেশগুলোর অর্থনীতিকে আরও পরিবেশবান্ধব করতে এবং দেশগুলোয় জলবায়ু সংকটের কারণে সৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলায় খরচ করা হবে। বর্তমানে এই তহবিলে প্রতিবছর ১০০ বিলিয়ন ডলার জমা দিচ্ছে ধনী দেশগুলো। এ প্রস্তাবেও অসন্তোষ ছিল দরিদ্র দেশগুলোর। তাদের অভিযোগ, এই বরাদ্দও অপ্রতুল।

এই জলবায়ু চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন সম্মেলনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি ওপকে হোয়েকস্ট্রা। তিনি একটি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, জলবায়ু অর্থায়নের নতুন যুগের সূচনা হিসাবে কপ-২৯ সম্মেলনকে বিশ্ব স্মরণে রাখবে। অন্যদিকে চুক্তির সমালোচনা করে গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার শিফট আফ্রিকার পরিচালক মোহামেদ আদোউ বলেছেন, ‘উন্নয়নশীল বিশ্বের জন্য এই কপ একটি বিপর্যয়। ধনী দেশগুলো যারা জলবায়ু পরিবর্তনকে গুরুত্ব দেওয়ার দাবি করে, তারাই পৃথিবী ও এর বাসিন্দাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।’

 

 

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY Shipon tech bd