কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে দানসিন্দুক থেকে প্রায় তিন মাসের ব্যবধানের মধ্যে আরও এক বিশাল অর্থের সন্ধান পাওয়া গেছে। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল সোয়া ৭টায় দানসিন্দুক খোলার পর, মসজিদের দ্বিতীয় তলার মেঝেতে বসানো ৩৫টি বস্তা থেকে দেখা যায় কেবল গণনার মধ্যেই চার ঘণ্টার মধ্যে ৮ কোটি ২৩ লাখ টাকার বেশি অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছে। এই ভবনটিতে অবস্থিত দানসিন্দুকগুলো খুলে প্রথমে পাওয়া যায় বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার, বৈদেশিক মুদ্রা ও নগদ টাকা। গণনা চলাকালে প্রায় ৫০০ জনের বিশাল দল অংশ নেয়, যারা দীর্ঘ সময় ধরে meticulousভাবে এই আর্থিক রেকর্ডের কাজ চালিয়ে যান। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রূপালী ব্যাংক কিশোরগঞ্জ শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আলী হারেছী। তিনি জানান, এখন এই টাকা ব্যাংকে জমা দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আসলাম মোল্লা এবং পুলিশ সুপার ড. এস এম ফরহাদ হোসেনের উপস্থিতিতে দানবাক্সগুলো খোলা হয়। এর আগে, আগস্টে ১২ কোটি ৯ লাখ ৩৭ হাজার ২২০ টাকার সংগ্রহের রেকর্ড ছিল এবং এপ্রিলের সময় আরও ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকা পাওয়া যায়। এই মসজিদের দানবাক্স প্রায়ই নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করছে, যা প্রচুর মানুষ থেকে সেবা and দানের অংশ হিসেবে আসে। এই দানের টাকাগুলি নানা নির্মাণমূলক প্রকল্প, সমাজসেবা ও দরিদ্র মুখে পুনর্বাসনে ব্যয় করা হয়। আরও উল্লেখ্য, ২০২২ সালের নভেম্বর একই দানবাক্স থেকে ৮ কোটি ২১ লাখেরও বেশি টাকা সংগ্রহ হয়েছিল। পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটি জানিয়েছেন, এই অর্থ দিয়ে একটি দৃষ্টিনন্দন ইসলামিক কমপ্লেক্স নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, যার নাম ‘পাগলা মসজিদ ইসলামিক কমপ্লেক্স’। এই প্রকল্পের প্রাথমিক ব্যয়ের মূল্যমূল্য অনুমান করা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা, যেখানে ৩০,০০০ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী এই মসজিদটি শুধু ধর্মীয় কেন্দ্র নয়, বরং সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের এক গুরুত্বপূর্ণ স্পট হিসেবে গড়ে উঠবে।
Leave a Reply