বাংলাদেশে আর কোনও নির্বাচন না হলে দেশটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বড়গাঁও ইউনিয়নের কিশমত কেশুর বাড়ি লক্ষীরহাট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এক সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ক্ষমতাসীন দলটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে নারীদের কাছে ধর্মের অপব্যাখ্যা দিচ্ছে, যা দেশের জন্য খুবই ক্ষতিকর। তিনি সতর্ক করে দেন, যারা মুনাফেকি করছে, তাদের থেকে সাবধান থাকতে হবে।
একাদশ জাতীয় নির্বাচনের প্রক্রিয়া সংক্রান্ত বিষয়ে পিআর (প্রতীকের নির্বাচন) পদ্ধতি নিয়ে তিনি বলেন, এই পদ্ধতিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া সম্ভব নয়। এই ব্যবস্থা কোনোভাবেই দলের বাইরে থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দিচ্ছে না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের দল বৈধ ও সংস্কারের বিষয়গুলোতে একমত হলেও কিছু জোর করে চাপিয়ে দিলে এর দায় সরকারকেই নিতে হবে। তিনি জানান, বিএনপি এমন কর্মকাণ্ডে যাবে না, কারণ জনগণ যদি বুঝতে পারে ঝুঁকি হতে পারে;
প্রতিশ্রুতি দেন, ক্ষমতায় এলে ১৫ মাসের মধ্যে এক কোটি বেকারের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে। পাশাপাশি, বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ স্বাধীন ও নিরপেক্ষ করার লক্ষ্যে কাজ করবেন।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক বাদ দেওয়াকে তিনি ঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেন। তার দাবি, এটা শিক্ষাব্যবস্থায় অপ্রয়োজনীয় বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে।
জিয়াউর রহমানের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নাম উচ্চতর মর্যাদার। তিনি রাজনীতিতে নতুন দর্শনের সূচনা করেছিলেন, যা আজও প্রাসঙ্গিক এবং গুরুত্বপূর্ণ।
মির্জা ফখরুল ভাষ্য দেন, জামায়াতে ইসলামীরা বলছে, তারা যা বলছে সেটাই করতে হবে। তা না করলে ভোট হবে না, এমন ভয় দেখানো হচ্ছে। তিনি বলেন, ভোট ও নির্বাচন নিয়ে জামায়াতের এত ভয় কেন? কারণ, ভোটে জয় না হলে তাদের অস্তিত্ব টিকে থাকবে না। এ কারণেই তারা ভোট ও নির্বাচনে ভয় পাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে একটাও এনসিপি (ন্যাশনাল অসোশিয়েশন অব পপুলার গ্রুপ) নেই। কিন্তু তারা কীভাবে ভোট পাবে? এজন্য জামায়াতের সঙ্গে সুর মিলিয়ে যাচ্ছে। তারা প্রচার করে, পিআর চায়, যদিও মানুষ এই বিষয়গুলো বুঝতে পারে না। এটি হচ্ছে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার এক কৌশল।
মির্জা ফখরুল দীর্ঘ ৯ মাস ধরে সংস্কার ও সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার পরেও কিছু অমীমাংসিত বিষয় চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হলে, তার দুষ্ণা সরকারকেই দিতে হবে বলে জানিয়েছেন।
অন্তর্বর্তী সময়ে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে, প্রথম ১৫ মাসের মধ্যে ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান, মহিলাদের জন্য ফ্যামিলি কার্ড ও কৃষকদের জন্য ফার্মার্স কার্ড তৈরির আশ্বাস দেন।
শেষে, দলটির নেতা-কর্মীরা ভবিষ্যতের আন্দোলনকে শক্তিশালী ও সফল করে তুলতে ঐক্যবদ্ধ থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
Leave a Reply