সর্বশেষঃ
সাবেক ১২ মন্ত্রীসহ ১৪ জনকে আজ হাজির করা হচ্ছে ট্রাইব্যুনালে দীপু মনির সুপারিশে মাউশিতে তিন হাজার পদায়ন প্রাইজবন্ডের ১২১তম ড্র: প্রথম পুরস্কার জিতেছেন ০১০৮৩৩১ নম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্ত: পাঁচ শরিয়াহ ব্যাংককে অকার্যকর ঘোষণা পাঁচ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের বোর্ড বাতিলের কারণে গ্রাহকদের সেবা অব্যাহত থাকবে পাঁচ ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন স্থগিত করল ডিএসই ও চিটস্টক দুর্বল ৫ ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডাররা ক্ষতিপূরণ পাবেন ৭ নভেম্বর বাংলাদেশের প্রগতির মাইলফলক: মির্জা ফখরুল নাহিদ ইসলাম: জুলাই সনদে নোট অব ডিসেন্ট থাকবে না মির্জা ফখরুলের অভিযোগ: সরকার নির্বাচন ব্যাহত করতে নিজেই পরিস্থিতি তৈরি করছে বিএনপি গণভোটে আলোচনা করতে রাজি নয়, জামায়াতের হামিদুর রহমানের দাবি জনমত গঠনে রাজপথে জামায়াত: হামিদুর রহমান
পুতিনের নির্দেশ: পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর প্রস্তুতি গ্রহণের ঘোষণা

পুতিনের নির্দেশ: পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর প্রস্তুতি গ্রহণের ঘোষণা

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘অবিলম্বে’ পারমাণবিক পরীক্ষা শুরুর ঘোষণা দেওয়ার জবাব হিসেবে পারমাণবিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। এই সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে তিনি ক্রেমলিনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের একটি জ্যেষ্ঠ বৈঠকে বসে, এই বিষয়ের জন্য প্রাথমিক পরিকল্পনা তৈরি এবং বাড়তি তথ্য সংগ্রহের নির্দেশ দেন। পুতিনের এই সিদ্ধান্তের পেছনে মূল কারণ হচ্ছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশ থেকে যদি কেউ পারমাণবিক পরীক্ষা চালাতে চান, তাহলে রাশিয়াকে সমান প্রতিক্রিয়া জানাতে বাধ্য হওয়ার আশঙ্কা। একাধিক সচেতন ব্যক্তি জানিয়েছেন, রুশ প্রশাসন এখন প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে যাতে পরিস্থিতি বিরূপ হলে শিগগিরই পরীক্ষায় নেমে পড়া যায়। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর থেকে রাশিয়া আর কখনো পারমাণবিক পরীক্ষা চালায়নি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বমঞ্চে উত্তেজনা বাড়তে থাকায় নতুন করে এই বিষয়ে ভাবনা শুরু হয়েছে। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও অর্থনৈতিক ও সামরিক অভিনিবেশ বাড়ছে, যার কারণেই পরমাণু অস্ত্র নিয়ে নতুন দিক নির্দেশনা আসছে। ট্রাম্পের গত অক্টোবরের এক ঘোষণায় তিনি বলেছিলেন, “আমরা এখনই পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর নির্দেশ দিয়েছি। যাতে আমাদেরও শক্তিধর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়া যায়।” এর পাশাপাশি তিনি উল্লেখ করেছিলেন, রাশিয়ার নতুন পরীক্ষা নিয়ে সমালোচনাবোধ প্রকাশ করেছেন। ক্রেমলিনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুতিন এই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে একাধিক উচ্চপর্যায়ের পরামর্শ বৈঠক করেছেন, যেখানে প্রতিরক্ষামন্ত্রীসহ অন্যান্য জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ রাশিয়ার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তারা জানান, অপ্রকাশিত দুর্যোগ বা সংকট এড়াতে রাশিয়ার আর্কটিক অঞ্চলের নোভাইয়া জেমলাইয়া ঘাঁটিতে প্রস্তুতি অব্যাহত রয়েছে। বিশ্বে বর্তমানে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক শক্তি বহুমুখী অস্ত্রের মধ্যে সবচেয়ে বড় শক্তির আধিপত্য রয়েছে। রাশিয়ার কাছে প্রায় ৫ হাজার ৪৫৯টি পারমাণবিক ওয়ারহেড আছে, যার মধ্যে এক হাজার ৬০০টি সক্রিয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ারহেডের সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার ৫৫০, এর মধ্যে সক্রিয় প্রায় ৩৮০০। অতীতের কথায় গেলে, ১৯৬০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ছিল বিশাল সংখ্যক ৩১ হাজারের বেশি ওয়ারহেড। চীনও দ্রুত তার পারমাণবিক শক্তির ভাণ্ডার বাড়িয়ে চলেছে, বর্তমানে তাদের হাতে রয়েছে প্রায় ৬০০ ওয়ারহেড, যা প্রতিবছর গড়ে ১০০টি করে বাড়ছে। অন্যান্য দেশের মধ্যে রয়েছে ফ্রান্স, ব্রিটেন, ভারত, পাকিস্তান, ইসরায়েল ও উত্তর কোরিয়া। মাত্র কয়েক দশক আগে, ১৯৯২ সালে, যুক্তরাষ্ট্র শেষবার পারমাণবিক পরীক্ষা চালিয়েছিল। পরে ১৯96 সালে বিস্তৃত পারমাণবিক পরীক্ষা নিষিদ্ধকরণ চুক্তি (সিটিবিটি) স্বাক্ষরের মাধ্যমে এই ধরনের পরীক্ষার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। তবে, ভারতের, পাকিস্তানের এবং উত্তর কোরিয়ার পরীক্ষা তাদের পারমাণবিক শক্তির সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে। ট্রাম্প এখনও স্পষ্ট করেননি যে, তিনি যেসব পারমাণবিক পরীক্ষার কথা বলেছেন, তা হচ্ছে বিস্ফোরণমূলক পরীক্ষা নাকি পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা। বিশ্লেষকদের মতে, যদি পারমাণবিক বিস্ফোরণ হয়, তাহলে দেখা দিতে পারে বৈশ্বিক নিরাপত্তা সংকটের আশঙ্কা। কারণ অন্য দেশগুলোও পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিতে পারে। জাতিসংঘের নিরস্ত্রীকরণ গবেষণা সংস্থার জ্যেষ্ঠ গবেষক আন্দ্রে বাকলিৎসকি সতর্ক করে বলেছেন, পারমাণবিক পরীক্ষার পরিসর বাড়লে একে অপরের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা আরও গাঢ় হয়ে উঠবে এবং এটা সার্বভৌম বিশ্ব শান্তির জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করবে। তিনি আরও যোগ করেছেন, “ক্রেমলিনের এই প্রতিক্রিয়া এককথায় নতুন এক পারমাণবিক প্রতিযোগিতার সূচনা করতে পারে, যা শেষমেষ সামগ্রিক বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা ধাঁচবেয়েও পড়তে পারে।” এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববাসীর জন্য একটাই আশঙ্কা, পারমাণবিক শক্তির আধিপত্য আর বিস্তার ক্ষতিকর পরিণতি ডেকে আনতে পারে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY Shipon tech bd