জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, এই দেশের জাতীয় নির্বাচনের পথে যে অভিযান শুরু হয়েছে, তা যেন কোনভাবেই বিঘ্নিত না হয়। তিনি জানান, নির্বাচন কেন্দ্র করে বিভিন্ন পারাশক্তি ও এজেন্সি সক্রিয় হয়ে উঠবে। যদিও বিভিন্ন মত থাকলেও জাতীয় স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোকে একজোট হতে হবে। যদি সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকে, তাহলে পরাশক্তি ও অভ্যন্তরীণ শক্তি নির্বাচনের প্রক্রিয়া ও নতুন দেশের গঠনের কাজে বাধা দিতে পারবেন না।
আজ রোববার, ২৬ অক্টোবর, দুপুরে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আয়োজিত গণঅধিকার পরিষদের চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
পরওয়ার আরও বলেন, এ দেশের মানুষ জানে যে গণঅধিকার পরিষদ একটি ছাত্রসমাজের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। একটি রাজনৈতিক দলের সভাপতি হিসেবে তাঁর ওপর যে নির্যাতন ও শারীরিক আঘাত এসেছে, তা এ দেশের জনসাধারণ সহিহভাবে স্বীকার করে। বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার পর যে কঠোর নির্যতন ও পুলিশি নিপীড়ন করা হয়েছিল, তা দেশের মানুষ অগ্রাহ্য করেনি। দেশের সাধারণ মানুষের নুরুল হক নুরের প্রতি সহানুভূতি ও সমর্থন এসেছে। গত জুলাইয়ে গণঅভ্যুত্থানে পুলিশের নির্যাতনের ঘটনাও এ প্রমাণ দেয়।
তিনি বলেন, আমরা ফ্যাসিবাদের অবসান ও মুক্তির জন্য যে লড়াই করেছি, সেই লড়াই একটি রাজনৈতিক পুনর্জাগরণের আশা জাগিয়েছে। আমাদের বিশ্বাস ছিল, নতুন একটি বাংলাদেশ গড়ে তোলার মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠা হবে। সবার জন্য একযোগে গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি হবে—রাজনৈতিক দল, সাংবাদিক, ছাত্র ও সাধারণ জনগণ মত প্রকাশের স্বাধীনতা পাবেন। কিন্তু বিস্ময়জনক বিষয় হলো, নুরুল হক নুরের উপর আবার কেন এবং কিভাবে নির্যাতন চালানো হলো, তা দেখে পুরো জাতি অবাক হয়েছে। বর্তমানে তিনি অসুস্থ ও অস্বাভাবিকভাবে হাঁটছেন, দেশের বাইরে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এই মহান নেতার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করছে জামায়াতে ইসলামী।
পরওয়ার আরও বলেন, দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল চেতনায় ভরা জুলাই আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা মনে করেছিলাম, একটি সদ্য গণতান্ত্রিক জাতি গঠনে সকল বিরোধী মতের বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বিভিন্ন শক্তি ও এজেন্সি এই প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে চাইবে। এজন্য তিনি আশাবাদী, দেশের বৃহৎ স্বার্থে সবাইকে একসাথে থাকতে হবে।
জামায়াতের এই নেতার ভাষায়, ফ্যাসিবাদমুক্ত একটি সুন্দর ও স্বচ্ছ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার পথে অনেক বাধা আসবে। ভিন্ন মত মতান্তর থাকা সত্ত্বেও, আমাদের মূল লক্ষ্য হলো দেশের জন্য একযোগে কাজ করা। তিনি বলেন, আমরা এক দিকে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ চাই, অন্যদিকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। জনগণের ভোটের মাধ্যমে সত্যিকার অর্থে সম্মত সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য সব রাজনৈতিক দল একসাথে কাজ করলে, দেশের অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত শক্তি আমাদের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।
Leave a Reply