আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সম্পূর্ণ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার লক্ষ্যে বিএনপি নির্বাচন কমিশনকে ৩৬ দফা প্রস্তাব উপস্থাপন করেছে। বৃহস্পতিবার ঢাকা তার বিভাগের রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সাথে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে দলের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, who সাবেক ইসি সচিব ড. মোহাম্মদ জাকারিয়া এবং ইসমাইল জবিউলাহ। বৈঠক শেষে তিনি জানান, তাঁরা আশাবাদী যে, নির্বাচনী পরিবেশ উৎসবমুখর হবে এবং আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে যে চিন্তা ছিল সেটি কাটবে। তবে তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, বিগত নির্বাচনগুলো প্রহসন হিসেবে গণ্য হয়েছে, তাই আগামী নির্বাচন একইভাবে হবে না, তার জন্য সরকারি ও নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি রাখতে হবে।
বিএনপির ৩৬ দফা প্রস্তাবের মূল বিষয়গুলো হলো:
1. বর্তমান সরকারের জন্য নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো যথাযথ ভূমিকা পালন নিশ্চিত করা।
2. মাঠ প্রশাসনসহ নির্বাচনী ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে হবে, যাতে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়।
3. অতীতের বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে তাঁদের নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে বিরত রাখতে হবে।
4. প্রয়োজনীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে দক্ষ ও সৎ ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে হবে রিটার্নিং অফিসার হিসেবে।
5. নির্বাচনকালীন সময়ের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সেনাবাহিনী কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে এবং নির্বাচন পূর্বে তাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে হবে।
6. নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটদের ক্ষমতা বৃদ্ধি ও পর্যবেক্ষণ জোরদার করতে হবে।
7. ভোটের স্বচ্ছতা ও গোপনীয়তা বজায় রাখতে ভোটকক্ষে সিসি ক্যামেরা লাগানো উচিত।
8. প্রতিটি জেলায় অভিযোগ কেন্দ্র স্থাপন ও দ্রুত সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
9. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নির্বাচন আয়োজনের সময়সূচি পুনঃবিবেচনা ও স্থগিত করার দাবি জানানো হয়।
10. নির্বাচনের সময় দলীয় বা অনুচিত প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের নিয়োগের নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করতে হবে।
11. অতীতের নিষ্ঠুরতা ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মিথ্যা মামলার প্রত্যাহার ও অস্ত্র রাখার বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি।
12-36. নির্বাচন স্বচ্ছ ও যোগ্যতা নিয়ে নিশ্চিত করতে নানা বিধিনিষেধ, নজরদারি, অস্ত্র মুক্ত অভিযান, অর্থদুর্নীতি ও পেশিশক্তি প্রতিরোধ, ভোটর সচেতনতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছে বিএনপি।
অবশেষে, দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়, দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা আরও স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করতে হলে এ দফা প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন জরুরি। তবে ড. আব্দুল মঈন খান পরে সাংবাদিকদের জানান, তারা কোন লিখিত প্রস্তাব দেয়নি, যদিও দলিল নিশ্চিতভাবে উপস্থিত ছিল। এটি সমগ্র নির্বাচন প্রক্রিয়ার উন্নয়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা ও কমিশনের জন্য একটি পথনির্দেশনা है।
Leave a Reply