পাকিস্তানের তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে তোশাখানার দুটি মামলায় শনিবার (২০ ডিসেম্বর) অ্যাডিয়ালা জেল জেলায় বিশেষ আদালত পৃথকভাবে ১৭ বছর করে কারাদণ্ড নির্দিষ্ট করেছেন। এই সিদ্ধান্ত বিচারক সেন্ট্রাল শারুখ অর্জুমান্দ পরিচালিত মামলার শুনানির মাধ্যমে নেওয়া হয়।
বুশরা বিবির সাজা সময় তিনি সেকশন ৪০৯ অনুযায়ী ১০ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন, পাশাপাশি অন্যান্য ধারাগুলির অধীনে—সেকশন ৫, ২ ও ৪৭—এবং ইমরান খানও একই ধারায় ১০ বছর সাজা পান। সেইসাথে উভয়কেই ১৬.৪ মিলিয়ন পাকিস্তানি রুপির জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মোট সাজা দেওয়া হলো, প্রত্যেকের জন্যই ১৭ বছর।
এই মামলার মূল বিষয় হলো, ২০১৮-২০২২ সাল পর্যন্ত ইমরান খানের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে সৌদি আরব থেকে প্রাপ্ত উপহার সংক্রান্ত। ২০১৮ সালের তোশাখানা নিয়ম অনুযায়ী, এসব উপহার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল, কিন্তু অভিযোগ ওঠে, ইমরান খান ও বুশরা বিবি উপহারগুলো সঠিকভাবে নিবন্ধন না করে, সহকারী ডেপুটি মাল্টি-সেক্রেটারির চিঠি ব্যবহার করে অবৈধভাবে নিজের দখলে রেখেছেন।
উপহারগুলোর মূল্য প্রায় ৩৮ মিলিয়ন ইউরো বা আনুমানিক ৭১.৫ মিলিয়ন পাকিস্তানি রুপি। এ ঘটনার ফলে জাতীয় রাজস্বে প্রায় ৩৫.২৮ মিলিয়ন রুপি ক্ষতি হয়েছে।
মামলার মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২১ সালের মে মাসে সৌদি আরবের এক সফরে বুশরা বিবিকে উপহার হিসেবে দেওয়া একটি জুয়েলারি সেট—যার মধ্যে ছিল আংটি, ব্রেসলেট, নেকলেস এবং ইয়াররিং—তাকে দিয়ে এই মামলার অংশ হয়েছে।
জাতীয় হিসাবরক্ষণ ব্যুরো (এনএবিএ) আগস্ট ২০২২-এ ৩৭ দিনের তদন্ত শেষে এই মামলা দায়ের করে। এ দম্পতিকে ডিসেম্বর ২০২৪-এ আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত করা হয়, এবং ইসলামাবাদ আদালত তাদের বেকসুর খালাসের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে।
এটি প্রথম তোশাখানা মামলার থেকে আলাদা। প্রথম মামলায় দম্পতিকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড এবং মোট ১.৫৭ বিলিয়ন রুপি জরিমানা হয়েছিল। তবে, সেই সাজা পরে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট এপ্রিল ২০২৪-এ স্থগিত করে দেয়।
Leave a Reply