ন্যাশনাল নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করতে সরকারের অবশ্যই সব রাজনৈতিক দল প্রস্তুত থাকতে হবে। তিনি আরও বলেন, ইলেকট্রনিক ভোটিং ব্যবস্থা (ইসি) তখনই সিদ্ধান্ত নেবে যখন রাজনৈতিক দলগুলো ব্যাকরণগত ও মানসিকভাবে প্রস্তুত হবে। এজন্য তিনি আশা প্রকাশ করেন, সব দল যখন প্রস্তুত হবে, তখনই নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হবে।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে এনসিপির পলিসি ডায়লোগ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। নাহিদ ইসলাম জানান, ২৪ এর গণঅভ্যুত্থান কোন ব্যক্তির বা দলের বিরুদ্ধে ছিল না, বরং এটি ছিল ফ্যাসিস্ট সংস্কৃতির বিরুদ্ধে একটি বৃহৎ আন্দোলন। তিনি বলেন, দেশের স্বাধীচর্চা ও স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী দলগুলোই দেশের প্রতিষ্ঠান গড়ে দেয়। তবে স্বাধীনতার পর সেটি অন্যায়ভাবে হারিয়ে গেছে। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় থাকাকালীনও তিনি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াগুলো সম্পূর্ণরূপে এগিয়ে নিতে পারেননি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
নাহিদ ইসলামের মতে, দেশের উন্নয়নে গণতান্ত্রিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, বাংলাদেশে রাজনীতিতে ব্যক্তিগত নির্ভরতা থাকায় সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নীতিগুলি বদলে যায়। এর ফলে ব্যবসায়ী গোষ্ঠীগুলো একপক্ষের হয়ে কাজ করতে শুরু করে।
তিনি জানান, তিনি তাদের ভিশন ও মিশন থেকে কোনো আপস করবেন না। গণতান্ত্রিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারই তার মূল এজেন্ডা। আন্দোলনের নাম ‘বৈষম্যবিরোধী’ ছিল সচেতনভাবেই নেওয়া, কারণ এই নামটি আন্দোলনের জনপ্রিয়তা বাড়িয়েছিল।
এছাড়াও, তিনি বলেন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের পর ৭০ এর নির্বাচনে জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়, কিন্তু তখনকার সরকারের ঔদ্ধত্যের কারণে তা মানা হয়নি, ফলে দেশে যুদ্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। ৯০ এর অভ্যুত্থানেও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তা রক্ষিত হয়নি। যদি ২০২৪ এর অভ্যুত্থানের প্রতিশ্রুতি পালন না করা হয়, তাহলে দেশ বিপর্যয়ের পথে যেতে পারে।
নাহিদ ইসলাম দাবি করেন, এনসিপি কারো সঙ্গে আগে থেকে কোনো গোপন বা প্রকাশ্য চুক্তিতে যায়নি। অপপ্রচার চালানো হয়েছে তাদের ব্যাপারে। তিনি বলেন, খুব শিগগিরই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবেন। তৃতীয় একটি জোটের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। পুরোনো দলগুলো, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তাদের বিষয়ে জনগণের আস্থা আর থাকেনা। তাই নতুন ধারার রাজনীতি করতে চান তারা।
Leave a Reply