শেখ হাসিনার রায়ের ঘোষণা উপলক্ষে দেশব্যাপী আতঙ্ক ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, একটি বিশেষ মহল এই রায়কে কেন্দ্র করে নৈরাজ্য সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। রোববার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমানে দেশের রাজনীতি বিভ্রান্তির মধ্যে পড়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বেশ জটিল ও সংকটময়। কিছু দুর্বৃত্ত ও অন্ধকার প্রকৃতির গোষ্ঠী দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চায়।
তিনি আরও বলেন, হতাশা, বিভ্রান্তি ও অনিশ্চয়তার মাঝেও ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে পারে বলে আশার আলো দেখা যাচ্ছে। তাই নানা জটিলতায় এখনই সময় নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ ও নির্বিঘ্ন করতে সব রাজনৈতিক দলকে এককাট επակցিত হতে হবে।
ফখরুল আরও মন্তব্য করেন, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন ভালো নয়, পরিস্থিতি স্বাভাবিক নেই। দেশে যদি নির্বাচিত সরকার না থাকে, তবে এই সমস্যা সমাধান হবে না। তাই এখনই একটি গণতান্ত্রিক সরকার গঠন প্রয়োজন।
তিনি উল্লেখ করেন, আগামীকাল সোমবার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার দায়ে রায় ঘোষণা হবে। এই রায়কে কেন্দ্র করে এক ধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। অনেক মহল এই রায়কে কেন্দ্র করে অস্থিতিশীলতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চাইছে। এই পরিস্থিতিতে সকলকে এক涛নে সমর্থন দিয়ে, দেশবাসীর সুরক্ষা ও শান্তি রক্ষায় সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
মওলানা ভাসানীর অমূল্য অবদান স্মরণ করে ফখরুল বলেন, তিনি স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখতেন এবং এক কল্যাণকর রাষ্ট্র গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন। সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন হয়তো তিনি দেখার সুযোগ পাননি।
তিনি আরও বলেন, মওলানা ভাসানীর প্রতি বিএনপির দায়িত্ব অগ্রণী। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে তিনি দোয়া করেছিলেন ও মশিউর রহমান যাদু মিয়াকে জিয়াউর রহমানের সঙ্গে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, জুলাই মাসে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে রায়ের দিন ধার্য করা হয়েছে। এই রায়ের জন্য অপেক্ষা করছে দেশ। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলার রায় ঘোষণা করবে সোমবার (১৭ নভেম্বর)।
আদালতের অন্য দুই সদস্য হচ্ছেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
বিচারকার্য সরাসরি সম্প্রচার করা হবে বাংলাদেশ টেলিভিশনে, পাশাপাশি ঢাকা শহরের কয়েকটি স্থানে বড় স্ক্রিনে রায় পাঠের পরিবেশ তৈরি হবে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ফেসবুক পেজেও এই রায় লাইভ দেখা যাবে।
Leave a Reply