পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের সীমান্তে এক ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বন্দুকধারীরা একটি গাড়িতে গুলি চালিয়ে সরকারপন্থী এক মিলিশিয়া নেতাকে হত্যা করেছে। পাশাপাশি তার সঙ্গে থাকা আরও পাঁচজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। পরে ওই হত্যাকারীরা মরদেহগুলো আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় বলে বৃহস্পতিবার দেশটির একজন সরকারি কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন, যিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপি সংস্থা’কে এই তথ্য দেন।
ঘটনাটি প্রথম ঘটে বুধবার। নিহত ব্যক্তিরা দেশের ওই প্রদেশে এক ভয়াবহ সহিংসতার মুখোমুখি হয়েছেন, যা তালেবান ক্ষমতায় ফিরার পর থেকে এই অঞ্চলে ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে একটি ষড়যন্ত্রের গন্ধ থাকলেও এখনো কেউ দায় স্বীকার করেনি। তবে, এক জ্যেষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেছেন, বন্দুকধারীরা প্রথমে ওই মিলিশিয়া নেতাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এরপর তারা তার গাড়িতে জ্বালানি ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়, যাতে ঘটনাস্থলেই ছয়জনের দেহ সম্পূর্ণ পুড়ে যায়।
তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি), দেশটির আনুষ্ঠানিক তালেবান গোষ্ঠী, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা অস্বীকার করলেও, স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই মিলিশিয়া নেতা তাদের চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, পাকিস্তানি তালেবান এই ব্যক্তির কাছ থেকে চাঁদা দাবি করেছিল, যা নাকচ করে দেওয়ায় প্রতিশোধ হিসেবে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
পাকিস্তান অভিযোগ করে থাকে, আফগানিস্তানের তালেবান সরকার টিটিপির আর্মি আশ্রয় ও তাদের সীমান্ত পারাপারের অনুমতি দিচ্ছে, যা বরাবরই কাবুল অস্বীকার করে আসছে। দুই দেশের মধ্যে তিক্ততা বেড়ে চললেও, সম্প্রতি ৯ অক্টোবর কাবুলে এক বিস্ফোরণে দু’দেশের সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এর প্রেক্ষিতে, উভয় পক্ষের মধ্যে সীমান্ত বন্ধ হয়ে যায় এবং বড় ধরনের সংঘর্ষ ঘটে, ফলে বহু মানুষের প্রাণহানি হয়। পরে, এই সংকট সমাধানে উভয় দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যা কার্যকর হয়েছে। আগামী শনিবার এই দুই দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে তুরস্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
সূত্র: এএফপি।
Leave a Reply