পাকিস্তানের লাহোরে ২০২৩ সালের ৯ মে ঘটে ঘটনাবহুল সহিংসতার মামলায় পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) শীর্ষস্থানীয় নেত্রী ডা. ইয়াসমিন রশিদ, ওমর সরফরাজ চীমা, মাহমুদুর রশিদ এবং ইজাজ চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজন নেতাকে দীর্ঘ ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছে দেশটির সন্ত্রাস দমন আদালত (এটিসি)। এই রায় ঘোষণা করা হয় শনিবার (২০ ডিসেম্বর) লাহোরের কোট লাখপত জেল ভবনের আদালতে এটির বিচারক আরশাদ জাভেদ এর কাছ থেকে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২৩ সালের ৯ মে গোলবার্গ ও নাসিরাবাদ এলাকায় যানবাহনে অগ্নিসংযোগ এবং কালমা চকে একটি কনটেইনারে আগুন দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। গোটা ঘটনায় ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয় গোলবার্গ থানার চার্জশিটে। এই মামলায় ডা. ইয়াসমিন রশিদসহ সাতজনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, অন্যদিকে ২২ জন নির্দোষ মুক্ত ছাড়া পেয়েছেন এবং চারজন পলাতক রয়েছেন।
অপরদিকে, কালমা চক কনটেইনার অগ্নিসংযোগের মামলায় ৩৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়, যেখানে ২৪ জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পাঁচজনের খালাস হয়েছে এবং সাতজন পলাতক। এ মামলায় পিটিআই নেতা মিয়া আসলাম ইকবালকেও পলাতক ঘোষণা করেছে আদালত।
এর আগেও মে ৯–এর সহিংসতা সংক্রান্ত মামলার রায়ে ডা. ইয়াসমিন রশিদ, ওমর সরফরাজ চীমা, মাহমুদুর রশিদ ও ইজাজ চৌধুরীকে বিভিন্ন মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছিল। সবশেষে, একদিন পরে, অন্য একটি এটিসি আদালত একই ঘটনায় তাদের ও আরও তিনজনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দেয়।
তবে এই মামলায় পিটিআইয়ের জ্যেষ্ঠ নেতা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশিসহ মোট ১৩ জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
পুলিশের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ৯ মে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই নেতা ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করা হলে তার সমর্থকরা ব্যাপক সহিংসতা শুরু করেন। এই সহিংসতায় লাহোরের কর্পস কমান্ডার হাউস, রাওয়ালপিন্ডির জেনারেল হেডকোয়ার্টার্সসহ বিভিন্ন সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনা আক্রান্ত ও ভাঙচুর করা হয়।
ইসলামাবাদ হাইকোর্টের প্রাঙ্গণে দুর্নীতি মামলার অভিযোগে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করার পর এ সহিংসতা আরও জোরদার হয়। যদিও অনেক পিটিআই নেতা-কর্মী এখন জামিনে মুক্তি পেয়েছেন, তবে এখনও অনেকজন কারাগারে রয়েছেন।
অন্যদিকে, শনিবারই এক আলাদা মামলায় ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে তোশাখানা-২ দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পেসি আদালত ঢাকায় ৮০টি শুনানির শেষে এ রায় প্রদান করেন। অভিযোগ, তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় উপহার কম দামে কেনার অভিযোগ আনা হয়েছিল।
রায়ে বলা হয়, ইমরান খান ও বুশরা বিবিকে পাকিস্তান দণ্ডবিধির ৩৪ ও ৪০৯ ধারায় ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, পাশাপাশি তাদের উপর অতিরিক্ত সাত বছর করে সাজা দেওয়া হয়। এছাড়াও তাদের মোট ১ কোটি ৬৪ লাখ রুপি জরিমানা করা হয়।
Leave a Reply